পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম লন্ডনে প্রথবারের মতো বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত রেমিট্যান্স মেলায় মঙ্গলবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রবাসিদের পাঠানো অর্থ সুরক্ষিত থাকবে এবং এই অর্থ থেকে সরকারি প্রণোদনাসহ সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মাধ্যমের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি মুনাফা অর্জনের সুযোগ রয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে অর্থ পাঠানো ঝুঁকিপূর্ণ বলে কোনো কোনো মহল বিভিন্ন মাধ্যমে ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে কোনো ঝুঁকির মধ্যে নেই। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা উল্লেখ করে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩১ তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করোনা এবং যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এখনও বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে তার অবস্থান বজায় রেখেছে।’
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যা কারোই কাম্য নয়: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
কোনো ধরনের অপ্রপচারে বিভ্রান্ত না হয়ে বৈধ পথে বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি প্রবাসিদের আহ্বান জানান এবং চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশন করে বৈধ পথে যুক্তরাজ্য থেকে অর্থ পাঠানোর পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর দেশগুলোর মধ্যে চতুর্থ। ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা বৈধ উপায়ে আরও বেশি অর্থ দেশে পাঠালে এই অবস্থান ভবিষ্যতে উন্নীত হতে পারে।’
অনুষ্ঠানে রেমিটেন্স প্রেরণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনাসহ উৎসাহব্যঞ্জক পদক্ষেপ গ্রহণের বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করলে প্রতিমন্ত্রী এসব বিবেচনার আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে যুক্তরাজ্যে সোনালী ব্যাংক চালু করেছিলেন। তারই ভিত্তিতে পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য থেকে বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর সূচনা হয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নীতি অনুসরণ করে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রণোদনা ও সিআইপি মর্যাদাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবাসীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।’
হাইকমিশনার আশা করেন রেমিট্যান্স মেলা প্রবাসিদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আরও উৎসাহিত করবে। তিনি ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে আজ পর্যন্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ায় যে বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছেন তার প্রশংসা করে বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে তাদের এই গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: সরকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সুসংহত করতে কাজ করছে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী