ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাইওয়ে পুলিশ ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমাতে ভুয়া চালকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে অভিযান শুরু করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া দেশের পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার। জেলার প্রায় ৭৬ কিলোমিটার সড়ক ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের আওতায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
এসব সড়কে প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে।
যানবাহনের তীব্র গতি, আইন অমান্য করে নিষিদ্ধ তিন চাকার যান চলাচল, রাস্তার বাঁকসহ বিভিন্ন কারণে প্রায়ই এসব সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে জেলার খাতিহাটা হাইওয়ে পুলিশ নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে গত তিন মাসে ৪৯৮টি মামলা করেছে।
মামলার মধ্যে ২৫৩টি থ্রি-হুইলারের বিরুদ্ধে এবং ১৩৭টি দ্রুতগতির যানবাহনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়া আরও ১০৮টি মামলা করেছে হাইওয়ে পুলিশ।
এছাড়া পুলিশের অভিযানে মহাসড়ক দখল করে স্থাপন করা কিছু অস্থায়ী দোকানও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের বিশা রোড মোড়, কুত্তাপাড়া, শাহবাজপুর, কাউতলী মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
এই অভিযানের সময়, পুলিশ চলন্ত যানবাহনের গতি পরিমাপ করতে স্পিডগান ব্যবহার করে। এছাড়া নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাসের সুপারভাইজারসহ নিহত ২
চালকরা মদ বা মাদক সেবন করে গাড়ি চালাচ্ছেন কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এছাড়া মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, হাইওয়ে পুলিশ তাদের স্বল্প সংখ্যক জনবল দিয়ে এসব দুর্ঘটনারোধে কাজ করলেও চালকদের সচেতনতার অভাবে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে।
খন্তিহাটা হাইওয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চাঁদ বিশাস বলেন, হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যু ও আহতের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কমেছে।
তিনি বলেন, আমরা আশুগঞ্জের ধরখার পর্যন্ত চার লেনের সড়কে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছি।
এছাড়া গত ৩ মাসে হাইওয়ে পুলিশ বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ৪৯৮টি মামলা করেছে।
এদিকে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা এখনও মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে যাত্রী কল্যাণ প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে সারাদেশে সাত হজার ৬১৭টি সড়ক, রেলপথ ও নৌপথে দুর্ঘটনায় মোট ১০ হাজার ৮৫৮ জন নিহত এবং ১২ হাজার ৮৭৫ জন আহত হয়েছেন।
এর মধ্যে ছয় হাজার ৭৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ হাজার ৯৫১জন নিহত এবং ১২ হাজার ৩৫৬জন আহত হয়েছে যা গত আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিসংখ্যান।
এছাড়া ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।