প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান, যিনি ফারুক নামে পরিচিত, তার ভূমিকা অবিস্মরণীয় কারণ তিনি প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে অসামান্য দৃঢ়তার সঙ্গে অবদান রেখেছিলেন।
সংসদে তিনি বলেন, ‘ফারুক একজন মুক্তিযোদ্ধা। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের পর থেকেই তিনি ছাত্রলীগের একজন প্রাণবন্ত কর্মী ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে তিনি অসামান্য সাহসিকতার সঙ্গে অবদান রেখেছিলেন। ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা কখনোই ভোলার নয়।’
বুধবার ফারুকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে সংসদে শোক প্রস্তাবের আলোচনায় যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ফারুক শুধু একজন রাজনীতিবিদই ছিলেন না, তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও অবদান রেখেছিলেন। তার মৃত্যু আমাদের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সাংস্কৃতিক কর্মীরা আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়েছেন এবং নেতাকর্মীদের সাহস জুগিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ঘটনার পর যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা হচ্ছিল এবং কেউ তার নাম উচ্চারণ করার সাহস করেনি, তখন সংস্কৃতিকর্মীরা এগিয়ে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (ফারুক) বঙ্গবন্ধুর নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠন এবং দেশাত্মবোধক গানকে সামনে নিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত করতে ভূমিকা রেখেছিলেন। সুতরাং, তিনি এই দেশের জন্য একটি অবদান রেখেছেন।’
এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনের (বাজেট অধিবেশন) শুরুতে সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এ নিয়ে আলোচনা শেষে বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
আলোচনায় যোগ দেন- সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী (শেরপুর-২), আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু (ঝালোকাঠি-২), তোফায়েল আহমেদ (ভোলা-১), শেখ ফজলুল করিম সেলিম (গোপালগঞ্জ-২), আসাদুজ্জামান নূর (নীলফামারী-২), মেহের আফরোজ (গাজীপুর-৫) ও হাবিব হাসান (ঢাকা-১৮), বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ (ঢাকা-৬) ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
আকবর হোসেন পাঠান (ঢাকা-১৭), যিনি গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান।
এছাড়া সংসদ সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির সংসদ সদস্য কবির হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্য, প্রখ্যাত লেখক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রোকিয়া আফজাল রহমান, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির মা রহিমা ওয়াদুদ ও বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় মোখায় হতাহত এবং দেশ-বিদেশে দুর্ঘটনায় সংসদ গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
এক মিনিট নীরবতা পালন ও মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাফিজ রুহুল আমিন মাদানী (ময়মনসিংহ-৭)।
প্রথা অনুযায়ী, বর্তমান সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠানের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সংসদের দিনের কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
আরও পড়ুন: আইসিটি, অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও সুইডেনের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: আরও ৩ দিনের রিমান্ডে বিএনপি নেতা চাঁদ