দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিরসনের সহায়তার লক্ষ্যে দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ৪০ লাখ মার্কিন ডলার সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই সহায়তা রোহিঙ্গা মানবিক সংকট মোকাবিলার জন্য সম্প্রতি ঘোষিত ২০২১ সালের জয়েন্ট রেস্পন্স প্ল্যানের (জেআরপি) আওতায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আয়োজক সম্প্রদায়ের সহায়তায় জাতিসংঘের সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহৃত হবে বলে জানানো হয়েছে।
এই বছরের ইউএনএইচসিআর, ইউনিসেফ, ডব্লিউএফপি, আইওএম এবং আইএফআরসি’র জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪০ লাখ মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের জন্য ১ কোটি ডলার দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া
বুধবার বাংলাদেশে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ান দূতাবাস জানায়, মার্চ মাসে কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জরুরি সহায়তা করার জন্য ইতোমধ্যে আইওএমকে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং আয়োজক সম্প্রদায়কে, কোরিয়ার পক্ষ থেকে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলা, শিশু ও মেয়েদের সহায়তা দেয়া এবং জরুরি অবস্থা ও দুর্যোগ ত্রাণ ইত্যাদি ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকারে ভিত্তিতে আয়োজক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে সহয়ায়তা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা শিবিরে অগ্নিকাণ্ড: আইওএমকে ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিচ্ছে কোরিয়া
আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি, কোইকা'র মাধ্যমে কোরিয়া, রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং হোস্ট সম্প্রদায়কে অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক এনজিওর সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সহায়তার জন্য বেশ কয়েকটি মানবিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলে জানা গেছে।
ইউএনএফপিএর সহযোগিতায়, কোইকা কক্সবাজারে মহিলা ও মেয়েদের মাসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছে যা ২০২২-২৪ সময়ের জন্য তিন মিলিয়ন ডলার মূল্যের। কক্সবাজার শরণার্থী এবং আয়োজক সম্প্রদায়ের সমর্থনকারী বিভিন্ন প্রকল্পে কক্সবাজারে আদি, ওয়ার্ল্ড ভিশন এবং কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের মতো এনজিওর সাথেও কাজ করছে কোইকা।
আরও পড়ুন: ৬ষ্ঠ দফায় ভাসানচরের পথে ২৪৯৫ রোহিঙ্গা
বাংলাদেশের আস্থাভাজন অংশীদার হিসেবে, কোরিয়ান সরকার ২০১৭ সালের পর থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা শরণার্থী-সম্পর্কিত কার্যক্রমে সহায়তার জন্য বাংলাদেশে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রায় ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সরবরাহ করেছে কোরিয়া। এই মানবিক সহায়তা বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি এবং আয়োজক সম্প্রদায়ের সুরক্ষায় সহায়তা করবে।
এছাড়া মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের বিষয়ের টেকসই সমাধানের সন্ধানে মানবিক সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে চলেছে প্রজাতন্ত্র কোরিয়া।