মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো দমন-পীড়নকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ঘোষণা দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। কারণ মার্কিন এই পদক্ষেপ গণহত্যার বিষয়ে জবাবদিহিতা এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রমকে তরান্বিত করবে বলে প্রত্যাশা করছে ঢাকা।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘দেরিতে হলেও এটি একটি ভালো খবর। আমরা একে স্বাগত জানাই।’
তিনি বলেন, কোথাও গণহত্যা সংঘটিত হলে তা স্বীকার করতে হবে এবং অপরাধীদের শাস্তি থেকে মুক্তি দেয়া উচিত নয়।
মোমেন বলেন, আমরা বলি আমরা কোনো গণহত্যা দেখতে চাই না। দুর্ভাগ্যবশত, তবুও গণহত্যা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের ভালো বন্ধু উল্লেখ করে মোমেন আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এটি মিয়ানমারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে। যার ফলে তারা রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, ‘যদি এই মার্কিন ঘোষণার মাধ্যমে প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত হয়, তবে আমরা খুব খুশি হব।’
তিনি আরও বলেন, তারা দুটি লক্ষ্যের ওপর জোর দিচ্ছে - প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের কল্যাণ এবং গণহত্যার পুনরাবৃত্তি রোধ করা।
মোমেন বলেন, গণহত্যার শিকার ব্যক্তিরা অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন এবং আশা করেন যে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার দায়ের করা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাটি গতি পাবে।
ফোরটিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ঘোষণাকে রোহিঙ্গা এবং মিয়ানমারের সকল মানুষের জন্য এবং গণহত্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ব্যাপক প্রচেষ্টার জন্য ‘ঐতিহাসিক’ অর্জন বলে অভিহিত করেছেন।
ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, ‘গণহত্যা প্রতিরোধ করার জন্য বিশ্বনেতাদের অবশ্যই তা স্বীকার করতে হবে। মার্কিন সরকার আজকে ঠিক তাই করেছে।’
সোমবার ফোরটিফাই রাইটস বলেছে, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উচিত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করা এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) উত্থাপন করে তার নিষ্পত্তি নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: ওআইসির সিএফএম অধিবেশনে যোগ দিতে পাকিস্তান যাবেন না পররাষ্ট্রমন্ত্রী