খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বিনা লাইসেন্সে কোনো ব্যক্তি ধান-চালের ব্যবসা করতে পারবে না। লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করলে আইন অনুযায়ী কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সারা দেশে অভ্যন্তরীণ আমন ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন,লাইসেন্স নেই এমন অনেক ব্যক্তি ধান-চাল কিনে মজুত করে রাখছেন। এতে বাজারে ধান-চালের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়ে থাকে।
ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী নওগাঁ, কুষ্টিয়া, নেত্রকোণা ও দিনাজপুর জেলার সরকারি কর্মকর্তা, কৃষক, চালকল মালিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সরকার ৩ লাখ টন ধান ও ৫ লাখ টন চাল কিনবে: খাদ্যমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, বোরো মৌসুম থেকে ধান-চাল ব্যবসায়ীদের প্রতি সপ্তাহের রিটার্ন দাখিল করার নিয়ম চালু করা হয়েছে। অর্থাৎ যারা ধানের আড়তের ব্যবসা করছেন তাঁদেরকে প্রতি সপ্তাহে কতটুকু ধান কিনছেন, কতটুকু ধান কোন মিলে বিক্রি করছেন, তার হিসাব সরকারকে দিতে হবে। চালকল মালিকদেরও এই নিয়ম মেনে চলতে বলা হয়েছে। যারা এই হিসাব দেবে না তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়া যে সব মিলার কর্পোরেট গ্রুপের কোনও ব্রান্ডের নামে চাল বাজারজাত করার চেষ্টা করবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খাদ্য নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাদ্য সঙ্কট হতে পারে বলে আভাস দেয়া হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্য আমদানি করা হচ্ছে। তবে কৃষকদেরও এই পরিস্থিতিতে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষকদের চাষাবাদে উৎসাহিত করতে সার ও বিদ্যুতে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকী দিচ্ছে। কৃষকদের দায়িত্ব রয়েছে তাদের উৎপাদিত ধানের কিছু কিছু সরকারি গুদামে দেয়া।
এছাড়া ২০১৮-১০১৯ সালে ধানের দাম বাজারে অতিরিক্ত পরিমাণে কমে যায়। তখন কৃষকেরা হা-হুতাশ করতে শুরু করেন। এ পরিস্থিতিতে সরকার কৃষকদের ধানের নায্য দাম নিশ্চিত করতে মৌসুমের শুরুতেই ধান-চাল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেন।
এই সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহাদৎ হোসেন, নওগাঁ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক, রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিএম ফারুক হোসেন পাটওয়ারী, নওগাঁ ধান চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন, নওগাঁ জেলা মিল মালিক গ্রুপের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার, অটোমেটিক রাইস মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
আরও পড়ুন: খাদ্যশস্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর
চকচকে চাল বর্জন করে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন চাল খাওয়ার আহ্বান খাদ্যমন্ত্রীর