দ্বিতীয় ধাপে শেরপুর জেলা সদরের ১৪ ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট উৎসব শুরু হয়। কিন্তু দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ,সহিংসতার সংবাদ পাওয়া যায়। এতে চরমুচারিয়া ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়রাম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান বাবুলসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
এদিকে ব্যালট ছিনতাই, ব্যালটবাক্স ভাঙচুর, সহিংসতা এবং কেন্দ্র দখলের অভিযোগে পাঁচটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে কেন্দ্রগুলো বাতিল করা হয়। বাতিল হওয়া কেন্দ্রগুলো হলো-কামারিয়া ইউনিয়নের খুনুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,পাকুড়িয়া ইউনিয়নের চকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,গণইভরুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী ও পুরুষ কেন্দ্র এবং চর শেরপুর ইউনিয়নের নাগপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। সংঘর্ষ ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৩৭ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খুনুয়া কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মো. মোখুলেছুর রহমান জানান, বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা হুড়মুড়িয়ে ভোট কেন্দ্রের ভেতর ঢুকে পড়েন। তারা কর্তব্যরত নির্বাচনী কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তিনটি করে ব্যালট বই-এর ৯ সেট ব্যালট পেপার জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় তারা ব্যালট বাক্সও ভাঙচুর করে। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং শর্টগানের এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ব্যালট ছিনতাইয়ের পর কেন্দ্রটির ভোটগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার মো.হাসান নাহিদ চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে কেন্দ্রটি বাতিল করা হয়। বিভিন্ন কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন সহিংসতার ঘটনার কথা নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার ২
এছাড়া মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষের জেরে পাকুড়িয়া ইউনিয়নের চকপাড়া কেন্দ্র ও গণইভরুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র এবং চরশেরপুর ইউনিয়নের চকপাড়া ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে কেন্দ্রগুলো বাতিল করা হয়েছে।
লছমনপুর ইউনিয়নের হাতিআলগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বেলা পৌনে ১২টার দিকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে তোতা মিয়া (৩২) নামে একজন আহত হন। এসময় প্রায় দুই ঘন্টার মতো কেন্দ্রটিতে ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে।
পাকুড়িয়া চকপাড়া এলাকার নুরুন্নবী মিয়া (২৫) নামে ছুরিকাঘাতে আহত একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া চরশেরপুর, পাকুড়িয়া ও চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৮ জনের মতো আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ এবং ৩৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে পুলিশ। সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে দেখা যায় ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। কেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতিও দেখা যায়।
আরও পড়ুন: শেরপুরে নদীতে ভেসে এলো নারীর লাশ