স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া এবং বার্ষিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.৫ শতাংশ অর্জনের লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ঘাটতিসহ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পেশ করেছেন।
অডিও-ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে উপস্থাপিত তার ২৫২ পৃষ্ঠার বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতির হার ৯ শতাংশের ওপরে থেকে প্রায় ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার আশা করেছিলেন। অর্থনীতিবিদেরা এই লক্ষ্যকে উচ্চাভিলাষী হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
কামাল টানা তার পঞ্চম বাজেট উপস্থাপন করেছেন।
তিনি এবারের বাজেটে ব্যয়ের প্রস্তাব করেছেন ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যেখানে মোট রাজস্ব ধরা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আসবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে এবং ৭০ হাজার কোটি টাকা আসবে অন্যান্য উত্স থেকে।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।
তিনি পরিচালন ও অন্যান্য খাতে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ অনুমান করা হয়েছে, যা বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কম।
আরও পড়ুন: বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
ঘাটতি অভ্যন্তরীণ উত্স থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা অর্থায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে এবং বাইরের উত্স থেকে ১২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা আনা হবে।
চলতি বছরের ডিসেম্বরে বা আগামী বছরের জানুয়ারিতে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ বাজেট।
নির্বাচনকে সামনে রেখে অর্থমন্ত্রী বিভিন্ন পণ্যের ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের পাশাপাশি করমুক্ত ব্যক্তির আয়কর সাড়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন।
সামনের দিনগুলোতে সরকার যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে সেগুলোও তিনি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে আমাদের বর্তমান চ্যালেঞ্জ হল মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা, চলতি হিসাবের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নতি করা এবং বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করা।’
তিনি ‘স্বল্পোন্নত দেশগুলো থেকে টেকসই উত্তরণ এবং উত্তরণ-পরবর্তী বাস্তবতা’ মোকাবিলা করার জন্য কৌশলগুলো গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে শুল্ক যুক্তিযুক্তকরণ, রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে দেশীয় সম্পদ সংগ্রহ, ভর্তুকি প্রত্যাহার বা নগদ সহায়তা বা বিকল্প অন্বেষণ.. এখনই বিবেচনা করা উচিত।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘জনবান্ধব’ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে, যা দেশকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সংকট থেকে পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি একে ‘জনগণের টাকা লুটপাটের স্মার্ট বাজেট’ বলে নিন্দা করেছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বাজেটকে অবাস্তব আখ্যায়িত করে বলেছেন, সরকার জনগণের অর্থ ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন: 'স্মার্ট বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ১২,৫০০ ডলার, দারিদ্র্যসীমার ৩ শতাংশের কম হবে'