নেত্রকোণার খালিয়াজুড়ি উপজেলার সাতগাঁও এমবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিক জমিলা খাতুনের বিরুদ্ধে জাল সনদপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্রে ভূয়া তথ্য ব্যবহার করে শিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, শিক্ষিক জমিলা খাতুন মৌলভী পদে আস্থায়ী নিয়োগ পেয়ে ম্যানেজিং কমিটির অনুমোদন ছাড়াই জালিয়াতির মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। পরে এই শিক্ষিকা ব্যক্তিগত তথ্য গোপন করেন এবং তার বোন জমিলা খাতুনের সনদ ব্যবহার করে শুধুমাত্র নাম ও স্বামীর নাম দিয়ে চাকরিতে যোগদান করেন।
আরও পড়ুন: হলে স্মাটফোন ব্যবহার: এসএসসি পরীক্ষা থেকে ৪ শিক্ষক বহিষ্কার
অভিযোগে জানা গেছে, চাকরিতে যোগদানের পর তিনি তিনবার জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের জন্য আবেদন করেন। প্রথম আবেদন নামুঞ্জুর হলেও পরের বার তার নাম পরিবর্তন করে সার্টিফিকেটের নাম অনুযায়ী মোসাম্মৎ জমিলা খাতুন নাম দেন এবং তৃতীয়বার তিনি জন্ম তারিখ ০৯/০৫/১৯৬২ এর জায়গায় ০১/০৫/১৯৬২ পরিবর্তন করেন। মূলত তিনি তার বোন মোসাম্মাৎ জমিলা খাতুনের সার্টিফিকেটের নামের সাথে তার ব্যক্তিগত তথ্যের যাতে গড়মিল না থাকে সেই চেষ্টা করেছেন। এক পর্যায়ে তিনি মোসাম্মৎ জমিলা খাতুন নিয়ে ১৯৮৭ সালে থেকে আজ পর্যন্ত চাকরি করে আসছেন।
এ ব্যাপারে গত বুধবার (৩ নভেম্বর) নেত্রকোণা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন মোহাম্মদ শফিউল নামে এক ব্যক্তি। অনুলিপির কপি দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরেও।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, জমিলা খাতুন বিদ্যালয়ে নিয়োগ নেয়ার সময় ১৯৮৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষাগত যোগ্যতার যে সনদ জমা দেন তাতে দেখা যায়, ১ বছর বয়সে জমিলা খাতুন ১ম শ্রেণি, দশ বছর বয়সে দশম শ্রেণি (দাখিল) ও ১২ বছর বয়সে দ্বাদশ (আলিম) পাস করেন। এমনকি তৎকালীন নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্রে সুকৌশলে তিনি বাবা-মায়ের নাম ব্যবহার করেননি। এত অনিয়ম কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
আরও পড়ুন: এবার লক্ষ্মীপুরে ৭ মাদরাসাছাত্রের চুল কর্তন, অভিযুক্ত শিক্ষক আটক
অভিযোগকারী মোহাম্মদ শফিউল বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান।
অভিযুক্ত জমিলা খাতুন বলেন, ‘আমার সার্টিফিকেট যদি জাল হয় আপনারা শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে খোঁজ নেন, বোর্ড আমার সার্টিফিকেট দিয়েছে। পরে আবার দুইটা মিনিস্ট্রিতে অডিট হয়েছে, আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা বানোয়াট।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সুদর্শন সরকার বলেন, এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগের কাগজ আমরা পাইনি। এ রকম কোন বিষয়ে অভিযোগ থাকলে আমরা তা খতিয়ে দেখব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে শাবি শিক্ষকের নিজের লেখা বইয়ের সৌজন্য সংখ্যা
জেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফুর বলেন, ‘এরকম একটি অভিযোগ আমার কাছে এসেছে, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’