জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে বিচারিক আদালতের দেয়া জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেননি আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত। তবে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে সম্রাটের করা আবেদনটি ৩০ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। ফলে সম্রাটের জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
ওই মামলায় ১১ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ সম্রাটকে জামিন দেন। এই জামিন বাতিল চেয়ে ১৬ মে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। এর শুনানি নিয়ে ১৮ মে হাইকোর্ট সম্রাটকে দেয়া জামিন বাতিল করে তাকে সাত দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেন।
এই আদেশ স্থগিত চেয়ে সম্রাট আপিল বিভাগে আবেদন করেন; যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে সম্রাটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আরও পড়ুন: সম্রাটের জামিন বাতিল, আত্মসমর্পণের নির্দেশ
ক্যাসিনোকান্ডে ধরা খাওয়ার পর দায়ের হওয়া চার মামলার সব কটিতেই জামিন পাওয়ায় ১১ মে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএসএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে কারামুক্তি পান সম্রাট। তিনি এখনো ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তখন র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারের সময় সম্রাট ও আরমান মাতাল অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের কাছে বিদেশি মদ ছিল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন। গ্রেপ্তারের পর সম্রাট ও আরমানকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকায় আনার পর সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে তার কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব।
সম্রাটের কার্যালয়ে বন্য প্রাণীর চামড়া, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র পাওয়ার কথা জানানো হয়। বন্য প্রাণীর চামড়া রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। পরে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে রমনা থানায় মামলা করা হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং (অর্থ পাচার) আইনে মামলা করে। আর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়। মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। এই মামলায় আগামী ৯ জুন অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় জামিন পেলেন সম্রাট, মুক্তিতে বাধা নেই