প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন মানবিক বিবেচনায় তার সরকার দেশে আটকে পড়া বিহারীদের উন্নত জীবন দেয়ার পরিকল্পনা করছে, যদিও তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে পাকিস্তানের নাগরিকত্ব বেছে নিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা একজন মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতে চাই। হয়তো তারা এখানে থাকতে চায়নি, কিন্তু তারা এখন কোথায় যাবে? তাদের পরবর্তী প্রজন্ম এই দেশে জন্ম নিয়েছে। আমাদেরই তাদের জন্য কিছু করতে হবে।’
রবিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪৪ নং ওয়ার্ডের কাঁচকুড়া হাইস্কুল মাঠে আয়োজিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনির্মিত ১৮টি ওয়ার্ডের সড়ক অবকাঠামো ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ ও উন্নয়ন (ফেজ-১) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা পাকিস্তানে যেতে চেয়েছিল এবং স্বাধীনতার পর পাকিস্তানি নাগরিকত্ব নিতে চেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান কখনই তাদের গ্রহণ করেনি।’
আরও পড়ুন: সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে মেরিন ক্যাডেটদের ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে। কিন্তু তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা এখন তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনি নিয়ে বাংলাদেশে বসবাস করছে। তারা জেনেভা ক্যাম্পের ছোট জায়গায় অমানবিক জীবনযাপন করছে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিহারীরা অনেক পরিশ্রমী এবং তারা কারুশিল্পে অনেক দক্ষ।
তিনি বলেন, এজন্য আমি তাদের জন্য উন্নত বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম এবং যে কাজে তাদের দক্ষতা আছে,তাদেরকে সে কাজেই লাগাতে চেয়েছিলাম; যাতে তারা জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।
তিনি বলেন, ঢাকায় এটা করা যায় না, তার জন্য দরকার একটা সুবিধাজনক ভালো জায়গা। যেখানে শিল্প আছে বা তাদের চাকরির সুযোগ আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের জন্য কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের সুযোগ তৈরি করতে হবে। আমি চাই, তারা যেন একটি সুন্দর মানবিক জীবন পায়।
রাজধানী ঢাকায় কারও জমি বা ফ্ল্যাট না থাকলে জীবন অর্থহীন বলে দেশের মানুষের মানসিকতারও সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন,এই ধরনের চিন্তাভাবনা অবশ্যই মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলা উচিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে: প্রধানমন্ত্রী
দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন,‘আমরা রেল, সড়ক ও বিমান যোগাযোগের উন্নয়ন করছি। লোকজন তাদের কাজ শেষ করে সহজেই তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে। আমরা পরিকল্পিতভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে গুলশান এলাকায় ১০ বিঘা জমির একটি অংশ বের করেছেন, যেখানে একটি খেলার মাঠ তৈরি করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী আবারও দেশের জনগণকে বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবহারে সচেতন হওয়ার অনুরোধ করেন, কারণ সরকার এই ইউটিলিটিগুলোতে ভর্তুকি হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশাল ভর্তুকি দিচ্ছি, এগুলো সব জনগণের ট্যাক্সের টাকা।
তিনি বলেন, জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গবেষণালব্ধ জ্ঞান মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী