দীর্ঘ ১২ বছর পর সিলেটের কানাইঘাটে যুবক শাহনেওয়াজ হত্যা মামলায় ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে সিলেটের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার পাত্তন গ্রামের নুরুল হক ওরফে কুঠি মাস্টারের ছেলে আবুল কাশেম উরফে মারুফ, একই গ্রামের নুরুল হকের ছেলে বাবুল আহমেদ, ইরফান আলীর ছেলে লোকমান, কানাইঘাট উপজেলার মালিগ্রামের মৃত মকবুল আলীর ছেলে খলিল উদ্দিন ও একই এলাকার মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে দর্জি হেলাল।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় বিলিয়ার্ড খেলা নিয়ে দ্বন্দ্বে যুবক হত্যা: গ্রেপ্তার ৫
এর মধ্যে বুধবার রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবুল কাশেম ওরফে মারুফ ও দর্জি হেলাল। আসামি বাবুল আহমেদ, লোকমান ও খলিল উদ্দিন পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিদের সঙ্গে কানাইঘাট উপজেলার মালিগ্রামের ফখরুল ইসলামের ছেলে শাহনেওয়াজের পূর্ববিরোধ ছিল। এর জেরে ২০১১ সালের ২৬ জুন রাত ৯টার দিকে শাহনেওয়াজকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় আসামিরা। পরে শাহনেওয়াজের পরনের গেঞ্জি দিয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে কানাঘাট উপজেলার পর্বতপুর গ্রামের লাইন নদীতে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।
দুই দিন পরও শাহনেওয়াজ বাড়ি না ফেরায় তার পরিবার খুঁজতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে যুবক হত্যা: মূল হোতাসহ গ্রেপ্তার ৪
২৯ জুন সকাল ৯টার দিকে পর্বতপুর লাইন নদীর সাকোঁতে শাহনেওয়াজের লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন তার পরিবারকে খবর দেয়। পরিবারের লোকজন গিয়ে শাহনেওয়াজের লাশ শনাক্ত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহত শাহনেওয়াজের পিতা ফখরুল ইসলাম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে কানাইঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর কানাইঘাট থানার এসআই এনাম উদ্দিন আহমেদ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন এবং ২০১৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচার কাজ শুরু করেন আদালত।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে যুবক হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি, ৭ জনের যাবজ্জীবন
দীর্ঘ শুনানি ও ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার (২০ মার্চ) আদালত রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুল ইসলাম ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মো. ছয়ফুল আলম, এ এস এম এ গফুর ও রমা চন্দ্র নাথ মামলাটি পরিচালনা করেন।