এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। চার সপ্তাহের মধ্যে অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ তিনজনকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এর আগে গত রবিবার মাহফুজুর রহমান নামে আইনের এক ছাত্র রিটটি করেন। আবেদনটি উপস্থাপনের পর সোমবার শুনানির এখতিয়ার নেই উল্লেখ করে বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ তা কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। পরে ওই হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হলে রুল জারি করেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক অশ্রেণিকৃত ঋণ-বিনিয়োগের ওপর সুদ-মুনাফা হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বলা হয়েছে, অশ্রেণিকৃত ঋণ-বিনিয়োগের ওপর সুদ-মুনাফা হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো। কোনো ঋণ-বিনিয়োগের ওপর উল্লিখিতভাবে সুদ-মুনাফা হার ধার্য করার পরও যদি সংশ্লিষ্ট ঋণ-বিনিয়োগ গ্রহীতা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হন সেক্ষেত্রে যে সময়কালের জন্য খেলাপি হবে অর্থাৎ মেয়াদি ঋণ-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খেলাপি কিস্তি এবং চলতি মূলধন ঋণ-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মোট খেলাপি ঋণ-বিনিয়োগের ওপর সর্বোচ্চ দুই শতাংশ হারে দণ্ড সুদ-অতিরিক্ত মুনাফা আরোপ করা যাবে।
বর্ণিত দণ্ডসুদ-অতিরিক্ত মুনাফা ব্যতিরেকে ঋণ-বিনিয়োগের ওপর অন্য কোনো সুদ-মুনাফা-দণ্ডসুদ-অতিরিক্ত মুনাফা আরোপ করা যাবে না। চলতি বছর থেকে ব্যাংকের মোট ঋণ-বিনিয়োগ স্থিতির মধ্যে এসএমই’র ম্যানুফ্যাকচারিং খাতসহ শিল্পখাতে প্রদত্ত সব ঋণ-বিনিয়োগ স্থিতি অব্যবহিত পূর্ববর্তী তিন বছরের গড় হারের চেয়ে কোনোভাবেই কম হতে পারবে না। প্রি-শিপমেন্ট রফতানি ঋণের বিদ্যমান সর্বোচ্চ সুদ-মুনাফা হার ৭ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে।
রিট আবেদন করার পর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলার দিয়ে বলেছে, ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৯ শতাংশের বেশি ঋণ ক্ষেত্রে সুদ নিতে পারবে না। মৌখিকভাবে বলেছিল প্রতিষ্ঠানগুলো ৯ শতাংশের বেশি নিতে পারবে না, আর আমানতকারী যারা টাকা রাখেন তাদের ৬ শতাংশের বেশি সুদ দেবে না। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে আমানতকারীদের বিষয়ে কিছু বলা নেই। সুদের হার ৬ শতাংশের কারণে এবং কমানোর কারণে ২ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া সার্কুলারে শুধু ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের কথা রয়েছে, অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কথা নাই। এখন তারা চাইলে যা ইচ্ছা সুদ নিতে পারবে। শুধু ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান কেন, নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।