রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘাটু গ্রামের দুই সাঁওতাল কৃষক সেচের পানি না পেয়েই আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার দুই কৃষকের আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দায়ের করা দুটি মামলার পৃথক অভিযোগপত্রে পুলিশ এ তথ্য জানায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, জমিতে সেচের পানি না পেয়েই অভিনাথ মারাণ্ডি (৩০) ও রবি মারাণ্ডি (৩২) আত্মহত্যা করেন।
গোদাগাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান জানান, অভিনাথ মারাণ্ডির মৃত্যুর মামলার অভিযোগপত্র গত ২৭ এপ্রিল গোদাগাড়ী আমলি আদালতে দাখিল করা হয়। তদন্তের পর ২৯ এপ্রিল রবি মারাণ্ডির আত্মহত্যার প্রতিবেদন জমা পড়ে।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) বরখাস্ত অপারেটর শাখাওয়াত হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘২ সাঁওতাল কৃষকের মৃত্যু কীটনাশক পানেই’
সেচের পানি না দিয়ে আদিবাসী কৃষকদের হয়রানি করতেন শাখাওয়াত। তিনি তার কাছের লোকজনকে পানি সরবরাহ করতেন বলেও জানান এসআই।
এদিকে রাজশাহী জেলা পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক আব্দুর রফিক জানান, আদালত দুটি অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত শাখাওয়াত দীর্ঘদিন ধরে নিমঘাটু গ্রামের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের দুই কৃষক রবি ও তার চাচাতো ভাই অভিনাথকে সিরিয়াল নম্বর না দেয়ায়, তাদের ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। গত ২৪ মার্চ অভিযুক্ত শাখাওয়াতের সামনেই ভুক্তভোগী দুই কৃষক বিষপান করে।
নিহতদের পরিবারের ভাষ্যমতে, ‘তারা ক্ষোভ থেকে এই (আত্মহত্যার) সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
জানা যায়, ওইদিন বাড়ি পৌঁছানোর পর রাত ৯টার দিকে অভিনাথ মারা যান এবং দুদিন পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মারা যান রবি।
রামেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানি বিষপানে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।
পরে দুই কৃষকের মৃত্যুর তদন্তে চার সদস্যের একটি প্যানেল গঠন করে কৃষি মন্ত্রণালয়।
৩ এপ্রিল দুই কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ শাখাওয়াতকে গ্রেপ্তার করে, যিনি ৫ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতিও।
আরও পড়ুন: জমিতে পানি না পেয়ে বিষপানে সাঁওতাল কৃষকের আত্মহত্যা!