গভর্নর তার কার্যালয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেন, জাবেদ পাটোয়ারী প্রথম বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত যিনি ফারাসান দ্বীপ পরিদর্শনে এসেছেন। এটি এ দ্বীপবাসীর জন্য একটি অত্যন্ত আনন্দের দিন।
এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকার, সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস এবং এদেশে বসবাসরত ২৩ লক্ষাধিক প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ হতে গভর্নরকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত সৌদি আরবের ভিশন-২০৩০ এর আওতায় পর্যটনের বিষয় উল্লেখ করে ফারাসান দ্বীপের সমুদ্র এবং প্রাকৃতিক নিদর্শন ও সৌন্দর্য্য এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশেও সেন্টমার্টিনসহ এরূপ বেশ কিছু দ্বীপ রয়েছে উল্লেখ করে দু’দেশের পর্যটন কর্তৃপক্ষের মধ্যে পারষ্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং পর্যটক বিনিময়ের প্রস্তাব করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সৌদি আরবে ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগে আগ্রহের বিষয়টি গভর্নরকে অবহিত করেন। তিনি সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদেরকেও বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনুরোধ জানান।
এ সময় ফারাসান দ্বীপের গভর্নর সৌদি আরবের ভিশন-২০৩০ এর অর্জনে এখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা উল্লেখ করে ভূয়সী প্রশংসা করেন। একই সাথে তিনি তার পক্ষ হতে ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়েমেন থেকে হুতি মিলিশিয়া কর্তৃক এ অঞ্চলে বারবার আক্রমণের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সৌদি আরবের প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
গভর্নর জানান, ফারাসান দ্বীপ এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত একটি অনন্য সুন্দর দ্বীপ। এ অঞ্চলে ছোট বড় ২০০টির অধিক দ্বীপ রয়েছে যার মধ্যে তিনটি দ্বীপে মানুষ বসবাস করে। এ দ্বীপে প্রায় ৯ হাজার বছর পূর্বে মানুষের বসবাস শুরু হয়। আফ্রিকার পাশে এবং লোহিত সাগরে অবস্থিত হওয়ায় ভারত এবং দূরপ্রাচ্যের সাথে আফ্রিকা ও আরব অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে এ দ্বীপ কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন:কাতারের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল সৌদি আরব
এ দ্বীপটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে জানা যায়, রোমান সময় থেকেই এটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে অত্যন্ত সুপরিচিত। এটি মতি, আকিকসহ অন্যান্য মূল্যবান রত্ন ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত।
বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘকালের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বিষয় উল্লেখ করে দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক উন্নতি উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হয়।
আরও পড়ুন:সৌদি আরবে আলোচিত আবিরন হত্যা মামলায় ১ জনের মৃত্যুদণ্ড
ফারাসান দ্বীপ ত্যাগের পূর্বে রাষ্ট্রদূত সেখানকার কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষের সাথেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল এস এম আনিসুল হক ও রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকোনোমিক কাউন্সেলর মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সৌদি আরবে অগ্নিকাণ্ডে দুই ভাইসহ বাংলাদেশি ৬ শ্রমিক নিহত