সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ হতে ৩৫০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত আল-আহসা শহরের হুফুফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটি এলাকায় একটি সোফা কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৯ বাংলাদেশি ও ভারতীয় ১ জন নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকাল ৪টার (স্থানীয় সময়) দিকে আল-আহসা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল সিটি এলাকায় একটি সোফা কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সংঘটিত হয়। এতে ৯ জন অভিবাসী বাংলাদেশি ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন ও ২ জন আহত হয়।
দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রদূত ড. পাটোয়ারীর নির্দেশে কাউন্সেলর (শ্রম) মুহাম্মাদ রেজায়ে রাব্বী দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। তারা ঘটনাস্থল, হুফুফ কিং ফাহাদ হাসপাতাল মর্গ এবং সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় পরিদর্শন করেন ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেন।
ঘটনাস্থল থেকে জীবিত উদ্ধার বাংলাদেশি কর্মী বিপ্লব হোসেন ও মো. জুয়েল হোসেন দূতাবাস প্রতিনিধিকে জানান যে একজন ভারতীয় নাগরিকের পরিচালনাধীন সোফা কারখানাটিতে ১৪ জন বাংলাদেশি কর্মী কাজ করতেন।
তারা আরও জানান, শুক্রবার জুমার নামায শেষে খাওয়া-দাওয়া করে কারখানার উপরের আবাসনে কর্মীরা ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ নীচ থেকে আগুন আগুন চিৎকার শুনে তারা দু’জন দ্রুত সিড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন। চারদিকে কালো ধোঁয়ায় অন্ধকারে প্রবেশপথ আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তারা অনুমানের ওপর নির্ভর করে সুস্থ অবস্থায় বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে মার্কিন কনস্যুলেটে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২
অন্যান্য সহকর্মীরা কালো ধোঁয়ায় নি:শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যান। তিনজন কর্মী ঘটনার সময় কারখানার বাইরে থাকায় আক্রান্ত হননি বলে জানান তারা।
নিহত বাংলাদেশিরা হলেন-
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার জফির উদ্দিনের ছেলে মো. রুবেল হোসাইন; নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মো. দবির উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ উবায়দুল; নওগাঁর আত্রাই উপজেলার আইজাক প্রামানীকের ছেলে রমজান; রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার জমিরের ছেলে মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম; রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মোঃ শাহাদাত হোসাইনের ছেলে আরিফ; নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রহমান সরদারের ছেলে বারেক সরদার; মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ইউনুস ঢালীর ছেলে মো. জুবায়েত ঢালী; ঢাকার সাভার উপজেলার মৃত আলাউদ্দীনের ছেলে সাইফুল ইসলাম; রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মো. আনিসুর রহমান সরদারের ছেলে মো. মো. ফিরুজ আলী সরদার।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী মরদেহগুলো দ্রুত বাংলাদেশে পাঠানো বা স্থানীয়ভাবে দাফনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য শ্রমকল্যাণ উইংকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য সার্বিক সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত। রিয়াদস্থ শ্রম কল্যাণ উইং বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে অগ্নিকাণ্ডে পুড়েছে ১০ দোকান