শেরপুরের শ্রীবরদীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একটি বিপন্ন এশিয়ান হাতি হত্যার ঘটনায় জেলায় প্রথমবারের মতো চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে বন বিভাগ।
মামলার আসামিরা হলেন, জেলার মালাকোচা এলাকার কৃষক আমেজ উদ্দিন, তার ভাই সোমেজ উদ্দিন, মো. আশরাফুল ও মো. শাহজালাল।
বৃহস্পতিবার বালিজুরী রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, তিনি বাদী হয়ে শ্রীবরদী আদালতে বন্যপ্রাণী আইনে মামলা দায়েরের পর শ্রীবরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর ৩৬ ধারায় তফসিল-১ লঙ্ঘনের জন্য মামলাটি দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
আদালত চার আসামিকে তলব করে মামলার শুনানির জন্য ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন বলে জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম।
আরও পড়ুন: শেরপুর সীমান্তে বিদ্যুতায়িত করে হাতি হত্যার অভিযোগ
৯ নভেম্বর, উপজেলার সোনাঝুরী টিলায় স্থানীয় কৃষকদের সবজি চাষের জমির আশেপাশে বসানো বিদ্যুতায়িত জিআই তারে আটকে খাবার খুঁজতে আসা একটি হাতি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।
বন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, জমিগুলো আসলে বন বিভাগের মালিকানাধীন এবং কৃষকরা সেখানে অবৈধভাবে চাষাবাদ করছেন। তিনি বলেন, বনের জমি দখল করে কৃষিকাজ বৃদ্ধির কারণে এলাকায় বন্য হাতি আসতে শুরু করেছে।
জেলার হাতি প্রশিক্ষক দলের আদনান আসিফ জানান, গত ২০ থেকে ৩০ বছরে শেরপুরের গারো পার্বত্য অঞ্চলের বিশাল এলাকা ছোট হয়ে গেছে।পাহাড়ি এলাকায় মানব হানাদারদের কারণে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমে গেছে এবং অবশিষ্ট কয়েকটি হাতির খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
বন কর্মকর্তাদের মতে, গত দুই দশকে শেরপুর জেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৩০টি বন্য এশিয়ান হাতি মারা গেছে।
তাদের মধ্যে অনেকে গুলি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, কিংবা বিষক্রিয়ায় মারা গেছে এবং কেউ কেউ বার্ধক্য ও অসুস্থতার কারণে মারা গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।