ফরিদপুরের বহুল আলোচিত দুই হাজার কোটি টাকা অর্থ পাচার মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ও সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রীর ছোট ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের ছত্রচ্ছায়ায় হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী পরিচালিত হতো। তার গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা এ তথ্য জানান।
মঙ্গলবার দুপুর তিনটার দিকে ফরিদপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরও জানান, জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তর এর টেন্ডার বাণিজ্য, চাকরি দেয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করতো বাবর।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমএ জলিল, ডিবির ওসি রাকিবুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পুলিশের এই প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ফরিদপুরের বহুল আলোচিত দুই ভাই রুবেল- বরকতের অবৈধ বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হওয়ার পেছনে আসামিদের সহযোগিতা ছিল।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরের সেই পুলিশ পরিদর্শকের জামিন নামঞ্জুর
পুলিশ আরও জানায়, ঢাকা পুলিশের সহযোগিতায় সোমবার দিবাগত রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আসামি বাবরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার বাবর সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী (এলজিআরডি) ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছোট ভাই।
এর আগে ২০২১ সালের ৩ মার্চ দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় মোহতেশাম হোসেন বাবরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ছোট ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এএইচএম ফুয়াদ, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভী, যুবলীগ নেতা আশিকুর রহমান ফারহান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ওরফে ফাহিম, যুবলীগ নেতা কামরুল হাসান ডেভিড, মোহাম্মদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম।
এই ১০ আসামির মধ্যে যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী মিনার ও তারিকুল ইসলাম নাসিম এখনও পলাতক, বাকিরা গ্রেপ্তার হয়েছে।
সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। এর আগে তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন।
এদিকে বাবরের গ্রেপ্তারের খবরে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের একটি অংশ আনন্দ মিছিল করে। আনন্দ মিছিলে নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামিম হক, ফরিদপুর পৌর মেয়র অমিতাভ বোস। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইমাম উদ্দিন স্কয়ারে গিয়ে সমাবেশ ও মিষ্টি বিতরণ করে।