সরকারি টার্গেট অনুযায়ী, আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ৪০% নবায়নযোগ্য জালানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে এখন থেকে রোড ম্যাপ প্রণয়ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় স্কটল্যান্ডের রাজধানী গ্লাসগোয় কপ২৬ সম্মেলনের বাইরে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বিদ্যুৎ বিভাগ আয়োজিত ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ’ শীর্ষক সাইড ইভেন্টে তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকারি টার্গেট অনুযায়ী আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ৪০% নবায়নযোগ্য জালানি ব্যবহার নিশ্চিত করতে এখন থেকে রোড ম্যাপ প্রণয়ন করলে এগুলো অবশ্যই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে নবায়নযোগ্য জালানি তথা সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারের টার্গেট পূরণে আধুনিক প্রযুক্তি ও অর্থসহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।
তিনি বলেন, দেশের সিটি কর্পোরেশনগুলোর ময়লা আবর্জনাকে নবায়নযোগ্য জ্বালানি পরিণত করা এবং স্থানীয় মানুষকে সম্পৃক্ত করে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো গেলে একদিকে পরিবেশ রক্ষা পাবে। অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে দেশ লাভবান হবে। পাশাপাশি গ্রিন টেকনোলজির ব্যবহার বৃদ্ধি, মিটিগেশনে বৈশ্বিক উদ্যোগ ও প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তার বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: কৃষিতে সোলার প্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সহায়তার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারী নেতৃত্বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিষ্ময়কর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছরের শেষ নাগাদ দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসছে। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার সময় দেশে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ নিয়ে সরকার পরিচালনা শুরু করে গত ১২ বছরে তা বেড়ে বর্তমানে ২৪ হাজার মেগাওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে বাংলাদেশ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধিত হওয়ায় দেশের উন্নয়ন, মাথা পিছু আয়, গড় আয়ু বেড়েছে। মানুষের জীবন মানের উন্নতি হয়েছে। এখন দেশের প্রত্যন্ত এলাকার সর্বত্র মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়ায় তাদের আয়ও বেড়েছে। তিনি বলেন, একই কারণে এ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এখন মাথা পিছু জিডিপি ২২৫০ ডলার।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অব্যাহত কার্বন নিঃসরণের কারণে বাংলাদেশ ইনোসেন্ট ক্লাইমেট ভিক্টিম। অথচ এ জন্য আমরা মোটেও দায়ী নই, দায়ী উন্নত বিশ্ব দেশগুলো। অথচ তারা এ জন্য কোন ক্ষতিপূরণ বা প্রযুক্তিগত সহয়তাও দিচ্ছে না।
আরও পড়ুন: কপ-২৬: তাপমাত্রা হ্রাস ও ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে আশাবাদী বাংলাদেশ
তিনি বলেন, জিডিপিসহ করোনাকালে দেশের মানুষের জীবন রক্ষা ও জীবিকার চাকা সচল রাখাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজই মূলতঃ অর্থনীতির সকল সূচকে বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তানকে পিছনে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ধারাবাহিকতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকায় এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ছিলেন নবায়নযোগ্য জালানি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎ সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন। বক্তব্য দেন পিকেএসএফ’র উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদিক।
আরও পড়ুন: কপ-২৬ সম্মেলনে ‘লস ও ড্যামেজ’ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি