মঙ্গলবার করোনা আক্রান্ত মাহবুবুর রহমান বলেন, নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের জন্য কয়েক দিন ধরে তিনি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগে ফোন দিতে দিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. শাহিন তাকে জানিয়েছেন, গত কয়েক দিন ধরে যে প্রতিবেদন এসেছে তাতে পজেটিভ তালিকায় তাদের নাম নেই। কিন্তু নেগেটিভ তালিকায় নাম আছে কি না সে বিষয়েও এ কর্মকর্তা স্পষ্ট কিছু জানাতে পারেননি। নেগেটিভ তালিকা নাকি এখনও আসেনি।
এমন পরিস্থিতিতে মাহবুবুর রহমানের পরিবারের পরবর্তী নমুনা নেয়ারও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না স্বাস্থ্য বিভাগ। এ অবস্থায় পরিবারটির সবাই চরম হতাশা ও মানসিক যন্ত্রণায় রয়েছেন। এক মাস ধরে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে করোনার সাথে লড়তে লড়তে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
করোনা পজেটিভ থাকা মাহবুবুর রহমানের মেয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু সেই আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে করোনার কারণে। লকডাউনে ঘরে বন্দী বিভীষিকাময় জীবন পার করছে এ কিশোরী।
শুধু মাহবুবুর রহমানই নন, গাজীপুরে এ রকম ভোগান্তিতে পড়েছেন আরও অনেকে। লোকজনকে করোনা পরীক্ষার নমুনা দিতে গিয়ে ও পরীক্ষার প্রতিবেদন পেতে চরম বিড়ম্বনা ভোগ করতে হচ্ছে। দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে কেউ কেউ হারিয়ে যাচ্ছেন চিরতরে।
নগরীর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুন্নাহার খন্দকারের ছেলে করোনা পজেটিভ মোনায়েম খন্দকার জানান, গত ২৫ মে তার দ্বিতীয় নমুনা নেয়া হয় এবং এর প্রতিবেদন পেয়েছেন। কিন্তু আজ অবধি তৃতীয় নমুনা নেয়ার কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না।
ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী রহিজা আফসানা জানান, তার এক বন্ধুর মা জ্বর এবং করোনার উপসর্গ নিয়ে ভুগছিলেন। এক সপ্তাহ ধরে নমুনা সংগ্রহকারীরা আসি আসি করে সময় কাটিয়ে দেন। এরপর একজন জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে নমুনা দেয়া হলেও তার পর দিন ওই নারী মারা যান।
এদিকে, ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমানের পরিবারের ভোগান্তির বিষয়টি জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলামকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি নমুনা সংগ্রহের তারিখ এবং নমুনা দাতাদের নাম ইত্যাদি বিস্তারিত জানতে চেয়ে পরীক্ষার প্রতিবেদনের বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
কিন্তু মাহবুবুর রহমান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি যদি আজকে প্রতিবেদন বা আর পরবর্তী কোনো তথ্য না পান তাহলে স্বাভাবিক চলাফেরায় বাধ্য হবেন। কেননা করোনার কোনো লক্ষণই এখন আর তাদের নেই। তিনি আর কোনোভাবেই ধৈর্য ধরতে ও ঘরে বন্দী থাকতে চাচ্ছেন না।