প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজনদের কাছে যাওয়ার জন্য বাড়ির উদ্দেশে শহর ছাড়া সাধারণ মানুষের কাছে অনিবার্য। তবে মহামারির বছরটি স্পষ্টতই অনেককে তাদের স্বাভাবিক ছুটির পরিকল্পনার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে।
ঈদের ছুটিতে শহর ছেড়ে যাওয়া মানুষের নির্দিষ্ট সংখ্যা না পাওয়া গেলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে রাখা নজর অনুযায়ী এ সংখ্যা ৫০-৮০ লাখের মধ্যে বলে অনুমান করা হয়।
দেশে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ১ আগস্ট (আগামীকাল)।
করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর সবকিছুই বদলে গেছে। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের বিস্তার রোধে লকডাউন চলাকালে চাকরি বা কাজের সুযোগ হারানোর ফলে ব্যয়বহুল রাজধানী শহর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির অনেক মানুষ, যাদের বেশির ভাগই অভ্যন্তরীণ অভিবাসী এবং দিনমজুর।
যারা রয়েছেন, তাদের বাড়িতে যাত্রা এখন কেবল ঝুঁকি হিসেবে নয়, ঝামেলা হিসাবে দেখা হচ্ছে; কারণ তারা সামাজিক দূরত্ব এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য নির্দেশিকা বজায় রাখার বিষয়ে সজাগ নন। এছাড়া বন্যার কারণে প্রায় ৩১ জেলার মানুষ বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্ত্বেও যেসব যাত্রী শহর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তাদের অনেককেই রাজধানীর প্রধান বাস টার্মিনালে ব্যক্তিগত হ্যান্ড স্যানিটাইজার বহনের পাশাপাশি মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা গেছে।
গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে ইউএনবির এ সংবাদদাতা বিগত বছরের তুলনায় খুব কম সংখ্যক যাত্রী দেখতে পান। তবে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দূরত্বের জন্য বাস কর্তৃপক্ষ ‘যাত্রীপ্রতি দুটি আসন’ বজায় রাখায় বাসের টিকিটের দাম ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি।
গাবতলী বাস টার্মিনালের হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার মাস্টার মো. শুভ বলেন, ‘এবার আমাদের ধারণক্ষমতার প্রায় অর্ধেকেরও কম যাত্রীদের বহন করতে হবে। গ্রামমুখী যাত্রীদের সংখ্যা সন্তোষজনক নয়।’
দিগন্ত পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার সোহানুর রহমান আশা প্রকাশ করেন যে মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যাত্রী সংখ্যা বাড়তে পারে।
এরই মধ্যে অনেক মোটরসাইকেল চালককে আরিচা-পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে।
গাবতলী বাস টার্মিনালের মতো একই দৃশ্য দেখা গেছে সায়দাবাদ ও মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালেও।
বিপরীত চিত্র ছিল সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যেখানে প্রতিটি লঞ্চে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
এ বছর বাংলাদেশ রেলওয়ে তাদের মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে আগের বছরের তুলনায় কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়নি।