জরাজীর্ণ সেতু দুটির সামনে গতি সীমা কমানোর সংকেত দেখানো হলেও সংশ্লিষ্ট রেল কর্তৃপক্ষ নানা অজুহাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ফলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
উল্লাপাড়ার বঙ্কিরোট ও মহিষাখোলা কামারপাড়ার ২৬ ও ২৯ নং সেতু দুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন ঢাকার সাথে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ২০টি ট্রেন ধীরগতিতে চলছে।
রেলবিভাগ সূত্রে জানা যায়, সেতু দুটির ওপর দিয়ে ঢাকা-কলকাতা রুটের মৈত্রী এক্সপ্রেসসহ প্রায় ১৪টি আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেন এবং তেল, কয়লা ও মালবাহী ৬টি ট্রেন চলাচল করছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে রেল বিভাগ ওই সেতু দুটির নিচে শুধু লোহার অ্যাঙ্গেল, কাঠের স্লিপারের ঠেকনা (সিসি ক্লিক) দিয়ে কোনমতে ঠেকিয়ে রেখেছে।
এছাড়া, দুটি সেতুর দুপাশে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ২০ কিলোমিটার লেখা সতর্ক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। সেই সাথে রেল বিভাগ থেকে চার জন ওয়েম্যানও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যারা জরাজীর্ণ সেতু দুটিতে পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন। ট্রেন আসতে দেখলেই লাল ও সবুজ পতাকা উড়িয়ে ট্রেনের গতি কমিয়ে চলার সংকেত দেখান তারা। ফলে এ রুটে চলাচলকারী প্রায় সব ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় ঘটে। তারা সঠিক সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না।
যোগাযোগ করা হলে উল্লাপাড়া স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই রেলপথে সিরাজগঞ্জ থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত যতগুলো সেতু রয়েছে তার অধিকাংশই ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। এ দুটি সেতু বয়সও ১শ বছর পার হয়েছে।’
এছাড়া, উল্লাপাড়া ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার রেলপথ অংশটি ঐতিহাসিক চলনবিলের মধ্যে হওয়ায় প্রতি বছর বন্যা মৌসুমে পানির তীব্র স্রোত ও ঢেউয়ে এ সেতু দুটির গার্ডার দুর্বল হয়ে কোথাও কোথাও ফাটলেরও সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঝুঁকিপূর্ণভাবে ট্রেন চলাচলের কথা স্বীকার করে পাকশী রেলওয়ে বিভাগের (ডিআরএম) আহসান উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘শিগগিরই জরাজীর্ণ সেতু দু’টি সংস্কার করা হবে।’
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে প্রধান প্রকৌশলী (রাজশাহী) আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বলেন, ‘ইতিমধ্যে সেতু দুটির সংস্কারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে।’
এছাড়া, রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ সেতু দুটির অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে বলেও দাবি করেন তিনি।