নানা জটিলতার শেষে এবং অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর সুন্দরবনে বাঘ শুমারি শুরু হতে যাচ্ছে।
প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, দ্রুত অর্থ ছাড়ের চেষ্টা চলছে। অর্থ ছাড় হলে প্রথমেই সুন্দরবনে বাঘ গণনার কাজ শুরু হবে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প অনুমোদন হয়। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের একটি অংশে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা দিয়ে বাঘ গণনা করা হবে। চলতি অক্টোবর মাস থেকে এই কাজ শুরুর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অর্থ ছাড় না হওয়ায় প্রকল্পটি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
আরও পড়ুন: খুলনা মাতিয়েছে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ টিম
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ও প্রকল্পের পরিচালক আবু নাসের মহসিন বলেন, গত সপ্তাহে পরিকল্পনা কমিশন থেকে ৩ কোটি টাকা ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদন হয়েছে। এখন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় করলেই অর্থ পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রথমেই বাঘ গণনার কাজ শুরু হবে। মন্ত্রণালয়ের কাজে কতো সময় লাগবে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। এজন্য কোন মাস থেকে বাঘ গণনা শুরু হবে-সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। আশা করছি আগামী বছরের শুরু থেকেই শুমারির কাজ শুরু করা যাবে, সবই নির্ভর করছে অর্থছাড়ের ওপর।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, বর্তমানে বাঘ সারা বিশ্বে একটি বিপন্ন প্রাণী। বিশ্বের ১৩টি দেশে তিন হাজার ৮৪০টি বাঘ টিকে আছে।
২০১৮ সালের জরিপ মতে, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪টি। বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০০৯-২০১৭), ২০১০ সালের বিশ্ব বাঘ সম্মেলনের অঙ্গীকার, দ্বিতীয় টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৬-২০২৭) ও গ্লোবাল টাইগার ফোরামের সিদ্ধান্তের আলোকে দেশে বাঘের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ এবং সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ ও এর সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়।
প্রকল্পের অন্য কাজের মধ্যে রয়েছে-বাঘ যেন লোকালয়ে চলে না আসে, সে জন্য জনবসতি আছে এমন ৬০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের বেড়া দেয়া হবে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাঘ যেন নিরাপদ আশ্রয় পায় সেজন্য বনের মধ্যে ১২টি মাটির কেল্লা নির্মাণ করা হবে। সুন্দরবনের যে অংশে আগুন লাগার প্রবণতা বেশি, সেসব জায়গায় দুটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণসহ বনে আগুন লাগলে যাতে তাৎক্ষণিকভাবে তা নেভানো যায় সেজন্য যন্ত্রপাতি, পাইপ ও ড্রোন কিনবে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আরও ৪ ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হচ্ছে
‘সুন্দরবনকে র্যাবের দস্যুমুক্ত করাই মানসম্পন্ন চলচ্চিত্রের অনুপ্রেরণা’