দেশের অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এনআরবিদের সিআইপি মর্যাদা দেয়া হয়। বর্তমানে ৩৫ জন এনআরবি এ মর্যাদা ভোগ করছেন।
সিআইপিদের সংখ্যা বাড়ানোর তথ্য প্রবাসীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গত ১০ জানুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপন জারি এবং তা সব বাংলাদেশি দূতাবাস ও হাইকমিশনে পাঠিয়েছে।
এ বছর সরকার এনআরবিদের মাঝ থেকে সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী পাঁচজন, সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স সরবরাহকারী ৭৫ জন ও বাংলাদেশি পণ্য আমদানিকরক প্রথম ১০ জনকে সিআইপি মর্যাদা দেবে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুনিরুস সালেহীন ইউএনবিকে বলেন, ‘বৈধ পথে অধিক রেমিট্যান্স পাঠাতে আরও মানুষকে উৎসাহ দেয়ার জন্য সরকার সিআইপিদের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
গত বছর বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে ১৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স গ্রহণ করে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাওয়া দেশের তালিকায় নয় নম্বরে ছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের আগে ছিল শুধু ভারত (৭৯.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) ও পাকিস্তান (২০.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
মুনিরুস সালেহীন জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশে কমপক্ষে এক লাখ মার্কিন ডলার পাঠানো যেকোনো অনাবাসী বাংলাদেশি সিআইপি মর্যাদার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আগে আবেদনের জন্য দুই লাখ মার্কিন ডলার পাঠানোর যোগ্যতা থাকতে হতো।
তবে বাকি দুই ক্যাটাগরি- বিনিয়োগকারী ও আমদানিকারকদের জন্য শর্তগুলো অপরিবর্তীত থাকবে।
এনআরবিদের মধ্যে যারা ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তিন লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ শিল্পখাতে সরাসরি বিনিয়োগ করেছেন এবং যারা তিন লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের বাংলাদেশি পণ্য আমদানি করেছেন তারা সিআইপি মর্যাদার জন্য আবেদন করতে পারবেন বলে জানান সালেহীন।
আবেদনের নীতিমালা www.probashi.gov.bd ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরাসরি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনে আবেদন করতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সালেহীন বলেন, সরকার ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ৩৫ এনআরবি সিআইপির নাম আগামী জুনের মধ্যে ঘোষণা করবে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য গত বছর এনআরবি সিআইপি হিসেবে যাদের নাম ঘোষণা করা হয় তাদের মধ্যে ২৯ জনকে সর্বোচ্চ পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর জন্য এবং বাকি ছয়জনকে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির জন্য সিআইপি মর্যাদা দেয়া হয়।
সিআইপি (এনআরবি) কার্ডধারীরা প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে এক বছর পর্যন্ত বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করেন। তারা ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণে সরকারি এয়ারলাইন্স, রেল, বাস ও নৌযানে আসন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পান। সেই সাথে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সিআইপি ও তাদের পোষ্যদের হাসপাতালে অগ্রাধিকারভাবে কেবিন দেয়া হয়।
সিআইপি কার্ডধারীরা বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহার ও লাগেজ বহনে বিশেষ সুবিধা পান। পাশাপাশি দেশে-বিদেশে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাতেও তাদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়।