এছাড়া ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১৫ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসের আতঙ্কসহ বাড়িঘর সহায় সম্বল হারানোর আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, এ অঞ্চলের ভাঙন এলাকার ইতোমধ্যেই ২ শতাধিক বাড়িঘরসহ ফসলি জমি ও গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ভাঙনের প্রায় ৪ শতাধিক বাড়িঘর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, একটি চিকিৎসা কেন্দ্র, ২টি ঈদগাহ মাঠ, ৫০টি তাঁত কারখানা, ৪০০ বিঘা আবাদী জমি, ৩ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, একটি কবরস্থান, একটি শ্মশান ঘাট, একটি মন্দির ও বহু গাছপালা বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙনকবলিত গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে, ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, বাঐখোলা, ঘাটাবাড়ি, ভেকা, জালালপুর, চিলাপাড়া ও হাট পাচিল, ঘাটাবাড়ী, কুঠিপাড়া, পাকুড়তলা।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, করোনাভাইরাসের আতঙ্কের চেয়ে বাড়িঘর হারানোর আতঙ্কে বেশি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গত ৪ বছর ধরে মিছিল, মানববন্ধন করে এখনও কোনো কাজ হয়নি। স্থায়ী তীর সংরক্ষরণ বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরুর অপেক্ষায় থাকলে এসব গ্রাম মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ভয়াবহ ভাঙন রোধে এখনই দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
তারা আরও জানান, গত বছর রাজশাহী পাউবোর উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, বগুড়া পওর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারিক আব্দুল্লাহ এ ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। তবে ভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু না হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘ভাঙনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ত্রাণ সামগ্রীর জন্য তালিকা করা হচ্ছে। যারা বাড়িঘর হারিয়েছে তাদেরকে সরকারি জায়গায় স্থায়ী করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, অসময়ে যমুনার নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও কয়েকদিন ধরে এই পানি কমতে শুরু করেছে। এ কারণে শাহজাদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। তবে শাহজাদপুরের ভাঙন রোধে প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রহ্মণগ্রাম হতে হাটপাচিল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকায় তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ, চর ড্রেজিং ও নদী শাসন রয়েছে। এ প্রস্তাবটি প্রি-একনেকে খসড়া আকারে অনুমোদনও হয়েছে। করোনার জন্য এ প্রকল্পটি একনেকে পাস হতে বিলম্ব হচ্ছে। এখন প্রকল্পটি পাস হলেই কাজ শুরু করা হবে। তবে ভাঙন প্রতিরোধে এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।