অন্যান্য বছর ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত এবং বিকেল থেকে সন্ধ্যার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত দেখা গেলেও ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার উচ্চতার কাঞ্চনজঙ্ঘা এবার দেখা যাচ্ছে একটানা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তই।
এর আগে শুধু পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা গেলেও এবছর পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জেলার কিছু কিছু স্থান থেকেও উপভোগ করা যাচ্ছে প্রকৃতির অনাবিল এই সৌন্দর্য।
কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরুপ দৃশ্য দেখার খবর পেয়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও দলে দলে পর্যটকরা ভিড় করছেন পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়ায়। তবে সবুজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের তেঁতুলিয়ায় আবাসন ও ভালো মানের খাবার হোটেলের অভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন পর্যটকরা।
সম্প্রতি কাঞ্চনজঙ্ঘার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়। এরপরই স্থানীয়সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে আসতে শুরু করেন পর্যটকরা। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুদের ভিড় সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
এবার জেলার করতোয়া ব্রীজ, অমরখানা মাগুরমারী চৌরাস্তা, মাঝিপাড়া, বাংলা টি কারখানা, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, রনচন্ডি, তীরনইহাট, কাশিমগঞ্জ, শালবাহান, আনন্দধারা, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য অবলোকন করেছেন।
তবে বাংলাদেশ আর ভারত সীমান্তের বুক চিরে বয়ে যাওয়া মহানন্দা নদীর পাড় বা ডাকবাংলো এলাকা থেকে কাঞ্চজঙ্ঘার অপূর্ব দুর্লভ মায়াবী দৃশ্য সবচেয়ে সুন্দরভাবে দেখা যাচ্ছে। আর এখানেই সবচেয়ে বেশি ভিড় করছেন পর্যটকরা।
সূর্যদয়ের পর কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়াটি প্রথমে লালচে দৃশ্যমান হয়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কাঞ্চনজঙ্ঘার রুপ পরিবর্তন হতে থাকে। সোনালী, রূপোলির পর তুষার শুভ্র বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা দৃশ্যমান হয় পর্যটকদের সামনে। আর বিকালের সূর্যকিরণে তা ধরা দেয় অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে।
১৯৫৩ সালের ২৯ মে ব্রিটিশ পবর্তারোহী দলের সদস্য জোয়ে ব্রাউন এবং জর্জ ব্যান্ড সর্বপ্রথম কাঞ্চনজঙ্ঘায় আরোহণ করেন। সুউচ্চ এই চূড়া দেখতে প্রতি বছর অসংখ্য দেশি-বিদেশি পর্যটক ছুটে যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা শহরের টাইগার হিল পয়েন্টে। আবার কেউ কেউ সরাসরি নেপালে গিয়েও উপভোগ করে কাঞ্চনজঙ্ঘার মায়াবি রূপ। তবে যাদের এসব সুযোগ মেলে না, সেসব বাংলাদেশি পর্যটক কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ অবলোকন করতে ছুটে আসেন তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধায়। এখানে মেঘমুক্ত আকাশে দিনের প্রথম সূর্যকিরণের সঙ্গে সঙ্গেই চোখে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানায়, নেপাল ও ভারত কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সবচেয়ে আদর্শ জায়গা। নেপাল, ভুটান, ভারত ও চীন তেঁতুলিয়ার কাছাকাছি হওয়ায় দেশের এ এলাকা থেকেই সাধারণত কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্ট দেখা যায়। বরফ আচ্ছাদিত নয়নাভিরাম কাঞ্চনজঙ্ঘা ও এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে দলে দলে পর্যটকরা এখানে আসতে শুরু করেছেন। ভোরের সূর্য ওঠার আগেই পর্যটকরা মহানন্দা নদীর পাড় ও তেঁতুলিয়া ডাক-বাংলো এলাকায় জড়ো হন।
লকডাউনের কারণে বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ কমে যাওয়া, বৃষ্টি হওয়া ও আকাশে মেঘ না থাকায় পঞ্চগড়সহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পস্ট ও দীর্ঘক্ষণ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নতুন রূপে ঢেলে সাজানো শুরু হয়েছে তেঁতুলিয়াকে। দৃষ্টিনন্দন করা হচ্ছে পিকনিক কর্নার ও জেলা পরিষদ ডাকবাংলো।
এছাড়াও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে মাঝিপাড়া বাইপাসে সারস পাখি, কালান্দিগঞ্জ বাজারে বাংলাদেশের প্রথম এক টাকার নোট, ভজনপুরে শাপলা এবং তিরনইহাটে মাছসহ নানান ইতিহাস নির্ভর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।
পিকনিক স্পট ডাকবাংলোসহ উপজেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভাস্কর্য স্থাপনের মাধ্যমে সৌন্দর্যবর্ধন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সুবিধার্থে নির্মাণ করা হয়েছে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং নদীর ওপারে বিস্তৃত সবুজ চা বাগানসহ দার্জিলিং শহরের নানান দৃশ্য।
এছাড়া মহানন্দার পাড়ে বসে কাঞ্চনজঙ্ঘা দর্শনের পর মনোমুগ্ধকর সন্ধ্যা উপভোগ করতে পারবেন পর্যটকরা। মধ্য দুপুরের মাথার উপর সূর্যের কিরণে হীরের মতো জ্বলজ্বল করে হাসতে দেখা যাবে মহানন্দার চরের একেকটি বালুকণা।
তবে আবাসন সংকটের কথা স্বীকার করে ইউএনও জানান, সরকারিভাবে তেঁতুলিয়ায় ১৪টি কক্ষ রয়েছে। এছাড়া বেসরকারিভাবে ২-৩টি হোটেল রয়েছে। তবে বর্তমানে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। পর্যটন কর্পোরেশনের উদ্যোগে তেঁতুলিয়ায় বহুতল ভবন নির্মাণের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহানহাট ইউনিয়নের রওশনপুরে অবস্থিত কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেটের ব্যবস্থাপক এ কে এম ওয়াহিদুল হক জানান, চিত্ত-বিনোদনের অন্যতম পর্যটন স্পট তেঁতুলিয়া। মানচিত্রের সবার ওপরে থাকায় এক নামে সবার কাছে পরিচিত সীমান্তবেষ্টিত পর্যটনখ্যাত এ জায়গাটি। প্রতিবছর হিমালয়ের পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখতে অগণিত দেশি-বিদেশি ভ্রমণ পিপাসুরা চা বাগান ও আনন্দ ধারায় (পিকনিক স্পট) ভিড় করেন। হিমালয়ের পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা আর দার্জিলিং কাছ থেকে দেখা মেলে তেঁতুলিয়ায় এলেই। শীত কেবল নামছে। পুরোপুরি শীত নামলে পর্যটকের সংখ্যাও বেড়ে যাবে।
দিনাজপুর সিটি রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী নিয়াজ আল শাহরিয়ার নির্ভিক জানান, এ বছর জেলার প্রায় সব স্থান থেকেই শুভ্র সাদা বরফে আচ্ছাদিত পর্বতমালা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে। এছাড়া দার্জিলিংয়ের পাহাড়, দার্জিলিং শহরের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, গাড়ি চলাচলের দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে।
পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার শম্পা বলেন, ভোরের আকাশে বরফ আচ্ছাদিত নয়নাভিরাম কাঞ্চনজঙ্ঘার রুপ দেখে আমি মুগ্ধ। কাছ থেকে দেখার চেয়ে দূরের কাঞ্চনজঙ্ঘার যে আলাদা একটা রূপ রয়েছে, তা তেঁতুলিয়ায় না এলে বোঝা যায় না।
ঠাকুরগাঁও থেকে আসা মুশফিরা রহমান নামে এক ছাত্রী জানান, কাঞ্চনজঙ্ঘার সুন্দর একটা দৃশ্য এখান থেকে দেখা যায়। যা বাংলাদেশের অন্য কোনো জায়গা থেকে পরিষ্কার দেখা যায় না। এবার কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্যটা আরও বেশি।
কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরুপ দৃশ্য অবলোকন করার জন্য স্বপরিবারে দিনাজপুর থেকে তেঁতুলিয়ায় এসেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশিকা আকবর তৃষা।
তিনি বলেন, এখানকার প্রকৃতি ও মানুষের ভালোবাসার জন্যই মনে হয় কাঞ্চনজঙ্ঘা এত সুন্দর করে আমাদের সামনে দেখা দিয়েছে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা সিকিম ও দার্জিলিং থেকে দেখেছি তবে বাংলাদেশ থেকে দেখাটা ব্যতিক্রম বলে জানালেন ঢাকা থেকে আসা রাহী সরকার ও আয়শা সিদ্দিকা দম্পত্তি। তাদের মতে একেক জায়গায় কাঞ্চনজঙ্ঘার একেক রুপ। তবে বাংলাদেশ থেকে দেখা যাওয়া দৃশ্যটা অপরূপ।
ঢাকা থেকে স্বস্ত্রীক আসা মো. শোয়েব বলেন, খুব কাছ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখলাম। এখানকার রাস্তাঘাট, প্রকৃতি দারুন। তবে থাকা-খাওয়ার ভালো ব্যবস্থা থাকলে আরও ভালো লাগতো।
ঢাকা থেকে আসা ফয়সাল জানান, কাঞ্চনজঙ্ঘার একেক সময় একেক দৃশ্য দেখেছি। প্রকৃতি এত সুন্দরভাবে এখানে ধরা দিয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। সরাসরি কাঞ্চনজঙ্ঘার এমন পরিষ্কার দৃশ্য অন্যান্য বছর দেখা যায়নি।
পাখি বিশেষজ্ঞ, পর্যটক ও ফটোগ্রাফার ফিরোজ আল সাবাহ জানান, আগন্তুক পর্যটকদের রাত যাপনের প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও জেলা পরিষদের দুটি ডাকবাংলো, বেরং কমপ্লেক্সসহ সরকারি বেসরকারি দুয়েকটি আবাসিক হোটেলে স্বল্প সংখ্যক পর্যটকের ব্যবস্থা হলেও এ মৌসুমে অধিকাংশ পর্যটকেরই রাত্রি যাপনের সুযোগ থাকে না। আবাসন সংকট ও ভালো মানের খাবার হোটেল না থাকায় অনেককেই ফিরে যেতে হয় জেলা শহর পঞ্চগড়ে।
পর্যটন মোটেলসহ আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে এখানে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে বলে জানান তিনি।
ট্যুরিষ্ট পুলিশ পঞ্চগড় জোনের ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম জানান, তেঁতুলিয়া শান্তিপূর্ণ উপজেলা। তবুও পর্যটকদের বাড়তি নিরাপত্তায় পর্যটকরা যেন নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করতে পারেন এজন্য এখানে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম চালু হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আন্তরিক পরিবেশ বিরাজমান হওয়ায় এ এলাকাটিকে পর্যটনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী জানান, পঞ্চগড় একটি শান্তিপূর্ণ জনপদ। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এখানে এসে নিরাপদে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখতে পারবেন। পর্যটকরা যাতে পঞ্চগড় এসে তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় যেতে পারেন, নিরাপদে ঘুরতে পারেন এজন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভ্রমণ পিপাসুরা ঘোরাফেরা করতে পারবেন।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান, ভৌগোলিক কারণে সীমান্তবর্তী তেঁতুলিয়া একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা। এখানে প্রতিবছরই পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পর্যটনবান্ধব স্থাপনা নির্মাণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যটকদের আবাসন সুবিধায় আমরা যথেষ্ট সচেতন।
তিনি জানান, জেলা পরিষদের দুটি ডাকবাংলো, তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নারে স্থান সংকুলান হয় না। এজন্য পিকনিক কর্নারের পাশে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ নতুন করে 'বেরং কমপ্লেক্স' নামে আরেকটি ডাকবাংলো নির্মাণ করা হয়েছে। অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগেও এখানে আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলছেন।
কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে পঞ্চগড় কিংবা তেঁতুলিয়া অথবা বাংলাবান্ধায় সরাসরি দূরপাল্লার কোচ (দিবারাত্রি) যাতায়াত করে। ঢাকা থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, নাবিল পরিবহন, এনা পরিবহন ও শ্যামলীর এসি/নন-এসি বাস চলাচল করছে।
ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, একতা বা দ্রুতযান এক্সপ্রেসে করে চলে আসতে পারেন পঞ্চগড়।
অন্যদিকে রাজশাহী থেকেও বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেসে করে আসতে পারেন পঞ্চগড়। এছাড়া ঢাকা থেকে বিমানে সৈয়দপুর পর্যন্ত আসতে পারেন। পঞ্চগড় থেকে বাস, মাইক্রোবাস, কার বা যে কোন যানবাহনে তেঁতুলিয়া উপজেলায় যেতে পারবেন। তেঁতুলিয়ায় আবাসনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ডাকবাংলো বুক করা যাবে।