নীলফামারীসহ তিস্তা সেচ এলাকা জুড়ে সেচের পানি নিশ্চিত করতে ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দেয়ায় মানুষের মাঝে ফিরেছে স্বস্তির আশ্বাস। ১ হাজার ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হবে এই প্রকল্পের কাজ।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে শুরু হয়ে এই প্রকল্পের কাজ আগামী ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে।
দীর্ঘদিন থেকে খালগুলো সংস্কার না হওয়ায় সেচ কমান্ডে পানি সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নীলফামারী, দিনাজপুর ও রংপুরের তিস্তা সেচ এলাকা জুড়ে ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচের পানি সরবরাহ করার মাধ্যমে ফসলের নিবিড়তা ২৩১ শতাংশ থেকে ২৬৮ শতাংশে উন্নিত হবে। এছাড়া প্রতি বছর অতিরিক্ত প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ৫.২৭ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে বলে দাবি নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের। একই সাথে সেচ এলাকায় পরিবেশ ও ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তরের উন্নতি, জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা, কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটির আওতায় ৭৬৬.৩১ কিলোমিটার সেচ খালের ‘ডাইক’ পুনবার্সন ও শক্তিশালী করা হবে। ৭২ কিলোমিটার সেচ পাইপ স্থাপন করা হবে।প্রোটেকশন দেওয়া হবে ১০ দশমিক ০৮ কিলোমিটার ও মেরামত করা হবে ১.০৬ কিলোমিটার। বাইপাস সেচ খাল নির্মাণ করা হবে ৭ দশমিক ১৩ কিলোমিটার। এছাড়াও ২৭টি কালভার্ট নির্মাণ, ৪টি সেতু নির্মান ও ২৭০ হেক্টর জলাধার পুন:খনন করা হবে।
এছাড়া সাড়ে নয় কিলোমিটারের চ্যানেল পুন:খনন করা হবে। ৬ কিলোমিটার পরিদর্শন রাস্তা নির্মান, ৫২.২৯ কিলোমিটার পরিদর্শন রাস্তা মেরামত, ৫৭টি নিকাশ কাঠামো নির্মাণ ও ৩টি মেরামত করা হবে। ২০টি রেগুলেটর নির্মাণ ও ৬টি রেগুলেটর মেরামত করা হবে। এছাড়াও ১৮টি অনবাসিক ভবন মেরামত ছাড়াও ৮৭ হাজারের বেশি গাছ রোপন করা হবে।
আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে খালগুলো সংস্কার না হওয়ায় সেচ কমান্ডে পানি সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য আমরা তিস্তা এলাকাতে সেচ এলাকায় নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি সরবরাহ করার জন্য আমরা এই প্রকল্পটি পাঠাই। গত ৪ মে প্রধানমন্ত্রী একনেক এ এই প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়।
তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে প্রকল্প এলাকার এক লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সেচের পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। প্রতি বছর অতিরিক্ত প্রায় ১ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ৫.২৭ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা মনে করি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রতি বছরে এক হাজার কোটি টাকার বেশি ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে।’