করোনা মহামারি পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হওয়ায় ১৫ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ তাদের একাডেমিক কার্যক্রম অনলাইনে শুরু করেছে, তবে তা আশানুরূপ ভাবে কার্যকর হচ্ছে না।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে আগামী জুলাই থেকে সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাবি কতৃপক্ষ। তবে তা না হলে অনলাইনে নেওয়া হবে পরীক্ষা।
ঢাবি কতৃপক্ষের পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কিছু বিভাগ এবং ইনস্টিটিউট পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেছে।
আরও পড়ুনঃ কিউএসের বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই ঢাবি বুয়েট
অন্যান্য বিভাগের মতো একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সাইন্স এবং দর্শন বিভাগ সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার তারিখ ঘোষণা করেও তা পিছিয়ে দেয়। এছাড়া স্বাস্থ্য ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ৭ জুলাই নির্ধারিত পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করে আগামী আগস্টে তারিখ দেয়।
তানভীর আহমেদ ফাহাদ নামে দর্শনের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অনেক বিভাগ তাদের পরীক্ষার তারিখ পিছিয়েছে। আবার ফার্সি ভাষা ও সাহিত্যের মতো অনেক বিভাগ পরীক্ষা নিয়ে নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা পরীক্ষা হবে কি হবে না সেই অনিশ্চয়তার আছি। পরীক্ষা হলে হল যেহেতু খুলছে না, কিছু দিনের জন্য আমাদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে।’
বর্তামানে পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে অনেক শিক্ষার্থী ঢাকায় থাকার ব্যবস্থা করেছে। তবে এই অনিশ্চয়তার মধ্যে কি করবে সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত নয়।
আরও পড়ুনঃ আজিমপুরে ঢাবি ছাত্রীর লাশ উদ্ধার
শিক্ষার্থীদের আবাসন সুবিধার কথা জিজ্ঞেস করলে ডিনরা জানান, আবাসন ব্যবস্থা কতৃপক্ষের ওপর নির্ভর করছে।
ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষা অনলাইনে বা অফলাইনে হবে। যদি পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায় এবং লকডাউন দেওয়া হয় তবে শিক্ষার্থীদের ঢাকায় আসা উচিত হবে না।’
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ইউএনবিকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক এক মিটিংয়ে আমার অনুষদের ১৬ টি বিভাগের ১০ টি বিভাগের প্রধানরা সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। এবং বাকিরা অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেছেন। যেহেতু পরিস্থিতিটাই অনিশ্চিত, সেহেতু অবস্থা বিবেবচনায় আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।’
আরও পড়ুনঃ ঢাবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু
ঢাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর আব্দুস সামাদ জানান, পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে, তাই ভ্যাকসিন না নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসা উচিত নয়।
এ বিষয়ে সাবেক ডাকসু সদস্য তানভির হাসান ইউএনবিকে বলেন, ‘অনলাইনে পরীক্ষার নেয়ার সিদ্ধান যৌক্তিক হলেও, সকলের জন্য সুবিধাজনক না। অধিকাংশের কাছে পিসি বা ল্যাপটপ নেই। এছাড়া হল না খুলে সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার পুরোপুরি শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিরোধী। আমরা পরীক্ষার বিরোধিতা করছিনা তবে এর আগে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া উচিত।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তুহিন ইমরান জানান, অনেকের অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে, এর মধ্যে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে আবাসনের জন্য অর্থ ব্যয় করতে হলে আরেকটি বড় সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে। তাছাড়া অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হলে গ্রামে থাকা শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক সমস্যার জন্য সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে বলে আশঙ্কা জানায়।