মেহেরপুরের ৩ উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ১৯ হাজার ৪২৭ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ করতে জেলায় ৯৭৮ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি হয়েছে। জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে ২০ শতাংশ জমিতে ধানের চারা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি অফিস জানায়, শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যেও কৃষকরা ইরি-বোরো চাষে মনোযোগী হয়েছেন। ১৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলবে আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত। কৃষকরা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ঠান্ডা পানিতে নেমে বীজ তোলার পাশাপাশি জমি প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এছাড়া আগাম আলু উত্তোলনের পর ফাঁকা জমিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ চলছে। গ্রামে গ্রামে চলছে উৎসবমুখর পরিবেশ। কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন।
কৃষি বিভাগ জানায়, এবার হাইব্রিড ও উপশী জাতের ধানের চাষে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্রি-২৮, ব্রি-৬৩, ৫০, ৫৮, ৭৪, ৮৯ সহ স্থানীয় জাতের ধান চাষ করা হচ্ছে। হাইব্রিড এবং উপশী জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১৯ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমিতে।
কৃষকদের মতে, বীজ, সার এবং শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি চাষাবাদে কিছুটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। তবে আগাম চারা রোপণ এবং সঠিক পরিচর্যার কারণে ফসল উৎপাদনে ভালো ফল আশা করা হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, এবছর আবহাওয়া ও বীজ ভাল থাকায় চাষীদের বীজতলার অবস্থা ভালো। অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি উপকরণের প্রাপ্যতায় নিধার্রিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষকদের রঙিন স্বপ্ন নতুন ফসলের ফলনে গোলা ভরার। সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে এ মৌসুমে বাম্পার ফলন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।
গাংনীর বাওট গ্রামের কৃষক ছাদ আলী জানান, এবছর আবহাওয়া ভাল ও বীজও ভাল পাওয়া গেছে তাই ফলনও ভালো হবে। গতবছর আবহাওয়া খারাপ ছিল বীজও খারাপ ছিল তাই চাষিরা ধান চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন।
শুকুরকান্দি গ্রামের আমির হামজা জানান, ধান চাষ করতে প্রথমেই কৃষক হোঁচট খাচ্ছে। খুচরা সারের দোকানগুলোতে বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে হচ্ছে। এছাড়া কীটনাশকের দামও লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি হয়েছে। সার কীটনাশকের দোকানগুলোতে সার মিলছে না। অথচ, অতিরিক্ত দাম দিলেই তারা সার বের করে দিচ্ছেন।
গাংনীর মাইলমারী গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, রাসায়নিক সারের কোনো সংকট আছে বলে আমি মনে করি না। যে সারের দাম ১ হাজার টাকা। দোকানদারকে নির্ধারিত দাম দিলে সার পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ, ১ হাজার ৪০০ টাকা দিলে পাওয়া যাচ্ছে। তাই কৃষি বিভাগ ও প্রশাসনের উচিৎ নিয়মিত তদরকি (মনিটরিং) করা। নাহলে কৃষকরা এবার ধানের আবাদ করতে গিয়ে মরে যাবে।
আরও পড়ুন: দেশ থেকে সার সংকট জাদুঘরে পাঠানো হবে: কৃষি সচিব