মো. ওবায়দুল মোড়ল বলেন, গত বছর অল্প পরিসরে আমি আগাম ফুলকপি চাষ করি। সেখান থেকে আমি নিজেই বীজ উৎপাদন করি। সেই বীজ থেকে এবার চারা তৈরি করেছি। নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে কিছু চারা বাইরে বিক্রি করে আয়ও করেছি। অন্য সময়ের চেয়ে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি জানান, এবছর তিনি তার দুই বিঘা জমিতে আগাম ফুলকপির চাষ করেছেন। বিঘায় প্রায় ৬ হাজারের মতো গাছ রয়েছে। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৬-৭ হাজার টাকা। যখন অন্য কৃষকেরা চারা লাগাবে, তখন তিনি ফুলকপি বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। বিঘা প্রতি ৬০-৮০ হাজার টাকা পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
এলাকার কৃষক মো. ইউনুস মোড়ল বলেন, ধান-গম চাষ করে আমরা খুব একটা লাভবান হতে পারিনি। ফলন ভালো হলেও বিক্রি করে খরচ পোষাতে পারিনি। তাই ধান চাষ করে লোকসান গুনতে হয়েছে। আবার শীতকালে ফুলকপির ভরা মৌসুমে ভালো দাম পাওয়া যায় না। তাই আমরা শীতকালীন এ সবজিটি আগাম চাষ করছি। আমি কৃষক ওবায়দুল মোড়লের কাছ থেকে আগাম ফুলকপির চারা প্রতিটি ১ টাকা দামে ক্রয় করেছি। চারার মানও ভালো। আশা করছি আগামী ১৫-১৭ দিনের মধ্যে বাজারে ফুলকপি সরবরাহ করতে পারবো।
ডুমুরিয়ার বীজ ব্যবসায়ী মহাদেব অধিকারী জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় ফুলকপি চাষ অধিক লাভজনক। ফুলকপির বীজ এখনও বিক্রি তেমন শুরু হয়নি। আর কয়েক সপ্তাহ পরে বিক্রির ধুম পড়বে। তখন সবাই কিনবে। সবার ফলন একসাথে হলে বাজারে দাম কম হয়। তখন কৃষকের লাভ হয় না। এখন অনেক কৃষক আগাম সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছে।
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, এই অঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এছাড়া কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই অঞ্চলের মানুষ আধুনিক চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এ এলাকার চাষিরা আগাম জাতের শাক-সবজি চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে এখন ফুলকপি চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
তিনি জানান, সবজি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাত এবং বাজারজাতকরণের জন্য আমরা সহায়তা করে থাকি। ফলে এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শাক-সবজির ভালো দাম পাচ্ছেন। বর্তমানে কৃষি অফিসের পরামর্শে আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করে কৃষক ওবায়দুল মোড়ল বেশ লাভবান হবেন বলে আমরা আশা করছি।