ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে সমর্থন জানানোর অভিযোগে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী (এসবিইউ) খারকিভের একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ভিক্টর নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। শুক্রবার আটক করা ভিক্টরের সম্পূর্ণ নাম-ঠিকানা জানায়নি এসবিইউ।
এসবিইউ জানায়, ‘নাজিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশংসা করে সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসংখ্য পোস্ট দিয়েছেন ভিক্টর।
এছাড়াও তিনি জাতীয় পতাকাকে মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে আখ্যায়িত করে ওই অঞ্চলসমূহকে পৃথক করে দেয়ার আহ্বান জানান।
এসবিইউ-এর সম্মুথে নিজের দোষ স্বীকার করে ভিক্টর বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি সমর্থন করেছি (ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসন)।এ জন্য আমি দুঃখিত…..আমি আমার সিদ্ধান্ত বদলেছি।’
ভিক্টর খারকিভ অঞ্চলের কমপক্ষে ৪০০ জনের একজন। ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া আগ্রাসন চালানোর পর ইউক্রেনের পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পাশ করা সহযোগিতা বিরোধী আইনের অধীনে যাদের আটক করা হয়েছিল।
রুশ বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করা, রুশ আগ্রাসনের কথা প্রকাশ্যে অস্বীকার করা বা মস্কোকে সমর্থন করার অপরাধে ১৫ পর্যন্ত সাজা হতে পারে। এমনকি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘সহযোগিতা করা অপরিহার্য’
যদিও জেলেনস্কি সরকারের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে, এমনকি অনেক রুশ ভাষাভাষীরাও তার সরকারকে সমর্থন করছে। তবে সব ইউক্রেনীয়রা রুশ এই আক্রমণের বিরোধিতা করে না।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন সফরকালে নাগরিকদের ওপর হামলায় জাতিসংঘ মহাসচিবের নিন্দা
পূর্বাঞ্চলের শিল্প অঞ্চল ডনবাসের কিছু রুশভাষী বাসিন্দারা মস্কোকে সমর্থন করছে।
সাম্প্রতিক যুদ্ধের আগেই এ অঞ্চলে মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইউক্রেনের সরকারি বাহিনীর মধ্যে আট বছর ধরে চলা সংঘর্ষে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান ওলেক্সি দানিলভ বলেছেন, ‘সহযোগীদের একটি তালিকা’ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এটি জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করা হবে। তবে দেশব্যাপী কতজন এই তালিকায় রয়েছে তা প্রকাশ করেননি তিনি।
সামরিক আইনের অধীনে ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষ ১১টি রুশপন্থী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করেছে। যার মধ্যে ৪৫০-সদস্যের সংসদে ২৫টি আসন থাকা বিরোধী দল প্ল্যাটফর্ম ফর লাইফও রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী কর্মীরা সক্রিয় লড়াইয়ে অংশ নিয়ে সরাসরি গোলাবর্ষণরে কাজ করছে।
এসবিইউ এর খারকিভ শাখার প্রধান রোমান দু্যদিন দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটি হল আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পিঠে কেউ যেন ছুরি মারতে না পারে; সে ব্যবস্থা করা।’
তিনি আরও বলেন, খারকিভ শাখা এমন লোকদের আটক করছে যারা আক্রমণকে সমর্থন করে, বিচ্ছিন্নতাবাদের ডাক দেয় এবং যারা দাবি করে যে ইউক্রেনীয় বাহিনী নিজেরাই তাদের শহরগুলোতে গোলাগুলি চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করল রাশিয়া