ভাইরাস প্রতিনিয়ত নিজেই পরিবর্তন হওয়ার মধ্য দিয়ে নতুন রূপ ধারণ করতে থাকে যাকে বলা হয় ‘মিউটেশন’।
এই মিউটেশনের মধ্য দিয়ে ভাইরাস যেমন শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে, তেমনি অনেক সময় এর শক্তি হ্রাসও পায়। নতুন রুপ নিয়ে মানুষের মাঝে দ্রুত বা সহজে সংক্রমিত হতে পারে এই ভাইরাস যা ওষুধ বা ভ্যাকসিনের মতো প্রতিরোধক ব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃত্যু প্রায় ১৭ লাখ
ভাইরাসগুলো স্বাভাবিকভাবেই বিকশিত হয় কারণ সেটি মানুষের মধ্য দিয়ে যায়।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের বেশকিছু স্থানে করোনাভাইরাসের নতুন এক ‘স্ট্রেইনের’ সন্ধান পাওয়া গেছে।
এ কারণে শনিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।
কোভিড-১৯ টিকা কোনো ‘জাদুর কাঠি’ নয়: ডব্লিউএইচও
এদিকে সংক্রমণ রোধে যুক্তরাজ্য থেকে সকল ফ্লাইট বাতিল বা সীমিত করার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ এবং কানাডা।
যুক্তরাজ্যে পাওয়া নতুন স্ট্রেইন কতটা উদ্বেগের?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন এই স্ট্রেইন যে আগের চেয়ে সহজে মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে, গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে বা ভ্যাকসিনকে মোকাবিলা করতে পারে - এমন সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
কোভিডের টিকাদান ইইউতে শুরু ২৭ ডিসেম্বর
ব্রিটিশ সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভাল্যান্স বলেছেন, ‘নতুন এই স্ট্রেইনটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং ভয়ঙ্কর রূপে পরিণত হচ্ছে, যার কারণে ডিসেম্বরের মধ্যে লন্ডনে শনাক্ত হওয়া ৬০ শতাংশের বেশি রোগী আক্রান্ত হবে করোনার নতুন এই স্ট্রেইনে।’
নতুন স্ট্রেইনটি আরও বেশি উদ্বেগের কারণ এটিতে প্রায় দুই ডজন মিউটেশন রয়েছে এবং এগুলোর মধ্যে আবার বেশ কয়েকটিতে শক্তিশালী প্রোটিন রয়েছে যা মানবকোষে সংযুক্ত এবং সংক্রমিত হতে ভাইরাস ব্যবহার করে থাকে।
যুক্তরাজ্যে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু
ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ডা. রবি গুপ্ত বলেন, ‘আমি অবশ্যই এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন।’ তিনি এবং অন্যান্য গবেষকরা একটি ওয়েবসাইটে (যেখানে বিজ্ঞানীরা তাদের বিভিন্ন উদ্ভাবন বা বিশ্লেষণ প্রকাশ করেন) এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তবে সেটি আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যালোচনা করা হয়নি বা কোনো জার্নালে প্রকাশিত হয়নি।
মূলত তিনটি কারণে এই ভাইরাসের নতুন রূপটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন স্ট্রেইনটি এর আগের মিউটেশনগুলোকে দ্রুত প্রতিস্থাপন করছে এবং এর মাধ্যমে ভাইরাসটির সংক্রমিত হওয়ার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
করোনার দ্বিতীয় ভ্যাকসিন অনুমোদনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
তবে বড় উদ্বেগের মধ্যেও আশার বাণী দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে যেসব ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হচ্ছে সেগুলো মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন আবির্ভূত এই ভাইরাসের বিরুদ্ধেও কার্যকর হবে।