দেশটির খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়ার পর সোমবার থেকে মার্কিন জনগণ ফাইজার-বায়োএনটেকের এই ভ্যাকসিন নেয়ার সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বৃহত্তম টিকাদান কর্মসূচি।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্যগুলো সোমবার থেকে করোনার ভ্যাকসিন পাবে
প্রথম দফায় চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মী এবং নার্সিংহোম বাসিন্দাদের ভ্যাকসিনের ডোজ দেয়া হবে বলে জানা গেছে। দ্রুত পরিবহন করা এই ভ্যাকসিনের মূল বিষয়, কারণ এটি অত্যন্ত স্বল্প তাপমাত্রায় (মাইনাস ৯৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রাখতে হয়।
স্থানীয় সময় রবিবার সকালের দিকে কোনো সময় অপচয় না করেই ফাইজারের কর্মীরা ভ্যাকসিনের বোতলগুলো বাক্সে রেখে প্যাকেজগুলো স্ক্যান করার পরপরই তা বরফ (ড্রাই আইস) দিয়ে ফ্রিজারে সংরক্ষণ করে।
করোনার বিরুদ্ধে ২ বছর সুরক্ষা দিতে পারবে রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ভি’
এরপর ভ্যাকসিনগুলো নেয়া হয় মিশিগানে অবস্থিত ফাইজারের পোর্টেজ, মিশিগান থেকে তা দ্রুত নেয়া হয় জেরাল্ড আর ফোর্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সেখান থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে রওনা করে প্রথম কার্গো বিমানটি।
ফাইজারের এ ভ্যাকসিন সরবরাহের কাজে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের ফেডএক্স এক্সপ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট রিচার্ড স্মিথ বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক দিন’। দেশজুড়ে বিভিন্ন বিতরণ স্থানে ভ্যাকসিনের কমপক্ষে ৬৩০টি প্যাকেজ সরবরাহ করছে ফেডএক্স।
করোনায় বিশ্বে মৃত্যু কমেছে: জেএইচইউ
চলতি সপ্তাহান্তেই ভ্যাকসিনের প্রথম ৩০ লাখ ডোজ যুক্তরাষ্ট্রের সব রাজ্যে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন রিচার্ড স্মিথ।
মার্কিন ফেডারেল কর্মকর্তারা জানান, ফাইজারের ভ্যাকসিনের প্রথম চালানটি সোমবার ১৪৫টি, মঙ্গলবার ৪২৫টি এবং এবং বুধবার বাকি ৬৬টি বিতরণ কেন্দ্রে পৌঁছাবে।
এরইমধ্যে যুক্তরাজ্য, কানাডা, বাহরাইন এবং সৌদি আরবে অনুমোদন পেয়েছে ফাইজারের এই ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিনটির জরুরি ব্যবহারও শুরু করেছে যুক্তরাজ্যে।
চিকিৎসক, বয়স্ক নাগরিক এবং নার্সিংহোমে থাকা বাসিন্দাদের পর আগামী জানুয়ারি থেকে দেশটির সাধারণ মানুষের মাঝে ভ্যাকসিন বিতরণ করা হতে পরে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্র
কোভিড-১৯ থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষার জন্য প্রথমবার টিকা গ্রহণকারীদের কিছুদিন পর দ্বিতীয় ডোজও নিতে হবে।
ফাইজার জানায়, ২১ দিনের ব্যবধানে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনটির দুটি ডোজ দেয়া হয়। এরমধ্যে দ্বিতীয় ডোজটি একটি বুস্টার ডোজ। প্রথম ডোজটি দেয়ার পর থেকেই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হতে শুরু করে এবং দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার সাতদিন পর এটি সম্পূর্ণ কার্যকর হয়।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যমতে, করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত এক কোটি ৬২ লাখ ৫১ হাজার ৯৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট ২ লাখ ৯৯ হাজার ১৬৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।