ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষ হয়ে গেলেও গোলাবর্ষণ এবং অবরুদ্ধ শহরগুলো থেকে বেসামরিক নাগরিকদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে কমপক্ষে দুই মিলিয়ন মানুষ ইউক্রেন থেকে পালিয়ে গেছে। যাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই নারী ও শিশু এবং বেশিরভাগ মানুষ প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছে।
ইতোমধ্যে রুশ সেন্যরা ইউক্রেনের দক্ষিণের বেশ কিছু এলাকা দখল করেছে। এছাড়া অন্যান্য অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রচণ্ড প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়েছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, বুধবার রাশিয়া ও ইউক্রেনের অন্তঃসত্বা নারী, নারী ও শিশু এবং অন্যদের জন্য সুমি শহর ছেড়ে যাওয়ার মতো একটি মানবিক করিডোরের ব্যাপারে একমত হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার অনেক বিদেশি ছাত্রসহ প্রায় পাঁচ হাজার বেসামরিক নাগরিকদের নিয়ে একটি লাল ক্রস লোগো দ্বারা চিহ্নিত বাস শহর ছেড়ে বাইরে যায়।
আরও পড়ুন: ফের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা রাশিয়ার
বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন শহরগুলোতে জীবন ক্রমশ অসহনীয় হয়ে উঠেছে এবং খাদ্য ও ওষুধের সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। বন্দর নগরী মারিউপোল; বেশ কয়েক দিন ধরে এখানে পানি, বিদ্যুৎ, স্যানিটারি সিস্টেম এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়া রয়েছে। শহরটির রাস্তায় অগণিত লাশ পড়ে রয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অঙ্গীকার করেছেন যে, তার দেশ তার শহর, মাঠ এবং নদীতীরে’ সর্বত্র তারা রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
বেসামরিক নাগরিকদের কি নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে?
বুধবার উত্তর-পূর্ব সীমান্তের শহর সুমি থেকে পোল্টাভা শহরে ১২ ঘণ্টা-দীর্ঘ যাত্রার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, শহর থেকে ত্রাণ বহনকারী প্রায় দুই ডজন বাস দেশ ত্যাগে আগ্রহী নাগরিকদের নিয়ে যাবে।
ইউক্রেনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, মঙ্গলবার সুমি থেকে এক হাজার ৭০০ বিদেশি শিক্ষার্থীসহ পাঁচ হাজার জনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা বাইডেনের
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা বেসামরিক নাগরিকদের জন্য রাশিয়ার কাছাকাছি কোনো নিরাপদ করিডোর স্থাপনের জন্য মস্কোর দেয়া প্রস্তাব গ্রহণ করবে না। তারা নাগরিকদের ইউক্রেনের পশ্চিমমুখী বিভিন্ন দেশে নিরাপদ প্রত্যাবাসন করাতে চায়।
মঙ্গলবার রুশ গোলাবর্ষণের কারণে নাগরিকদের স্থানান্তরের প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়।
ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী জানায়, মারিউপোল থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। কারণ রাশিয়ার সেনারা মঙ্গলবারও শহরে মানবিক পণ্যবাহী ইউক্রেনের একটি কনভয়ে গুলি চালায়।
তবে রাশিয়া জোর দিয়ে বলেছে যে তারা ইউক্রেনের পাঁচটি শহর ছেড়ে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মানবিক করিডোর দিতে প্রস্তুত। নাগরিকদের স্থানান্তরে আগে নেয়া প্রচেষ্টা ভেস্তে যাওয়ায়, দুই পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছে।