ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থাকা অবশিষ্ট কয়েক লাখ রোহিঙ্গার সংকট এবং নির্যাতনের শিকার হওয়ার কারণগুলোর সমাধান আন্তর্জাতিকভাবে অবশ্যই সর্বাধিক গুরুত্ব পাবে।
রোহিঙ্গা সংকটের পঞ্চম বর্ষপূর্তিতে ইইউ কমিশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট বোরেল, কমিশনার লেনারসিক এবং কমিশনার উরপিলাইনেন বলেন, ‘ইইউ আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারিক কার্যক্রমকে পূর্ণ সমর্থন করে।’
ইইউ শরণার্থী রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে নিরাপদে, স্থায়ীভাবে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরিয়ে আনার পক্ষে কাজ চালিয়ে যাবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইউরোপীয় কমিশন রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত অপরাধের সম্পূর্ণ দায় মিয়ানমারের নিশ্চিত করতে স্বাধীন তদন্ত কৌশলের কার্যক্রমে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী নির্যাতন করে রাখাইন রাজ্য থেকে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করে দেশ ত্যাগ হতে বাধ্য করে, যার প্রত্যক্ষদর্শী হয় বিশ্ববাসী।
যারা সেখান থেকে বিতারিত হয়েছিল তাদের বিপুল সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় অস্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পাঁচ বছর পরও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা ও তাদেরকে নিজভূমিতে ফেরার শর্ত তৈরি করতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানানো হলেও রোহিঙ্গাদের ভাগ্য এখনও অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের কয়েক দশক ধরে আশ্রয় দিয়ে আসছে। যা ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা শরণার্থীর নিরাপত্তা এবং মৌলিক মানবিক চাহিদা সরবরাহ
নিশ্চিত করার হার বৃদ্ধি পেয়ে দশ লাখে দাঁড়িয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইইউ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে মানবিক ও সংকটকালীন সহযোগিতা করতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে। পাঁচ বছর পর এককভাবে মানবিক সহযোগিতা করার সীমাবদ্ধতায় এসে পৌঁছেছে।’
এতে বলা হয়, তাদের প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত এই সংকটের মাত্রাগুলিকে চিহ্নিত করা, মানবিক, উন্নয়ন এবং শান্তির জন্য আরও টেকসই অন্তবর্তীকালীন সমাধানগুলো চিহ্নিত করা ও বাস্তবায়ন প্রয়োজন।
এই প্রক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন শান্তি ও পুণর্মিলনের আন্তর্জাতিক সংলাপে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
মিয়ানমার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধসহ ভয়ঙ্কর সব অপরাধ করেছে।
পড়ুন: স্বাভাবিক জীবনের অপেক্ষায় বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এসব অপরাধের জবাবদিহি প্রয়োজন। আজকের সামরিক নেতৃত্বাধীন
মিয়ানমারের জান্তা সরকার রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সংঘটিত অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সাধারণ মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করার তীব্র নিন্দা পুর্নব্যক্ত করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ মিয়ানমারের সকল মানুষ, অন্যান্য সংখ্যালুঘু এবং তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রতি দ্ব্যর্থহীন সমর্থন জ্ঞাপন করে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানকে শেখ হাসিনা