ক্যারিয়ার গঠনে সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি যুগপৎভাবে কাজ করে চাকরি বা ব্যবসায়িক পরিমণ্ডলের সামঞ্জস্যপূর্ণতা। সেখানে মেধা বিকাশের সাথে সম্মেলন ঘটে জাতীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থায়িত্বের। এই সমন্বয়ের মাঝে নিহিত থাকে শিক্ষা ও পেশাগত দিক থেকে বেড়ে ওঠার সহায়ক পরিবেশ। আর এই পরিবেশ পেতেই শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার ব্রত নিয়ে পাড়ি জমান উন্নত দেশগুলোতে। কাঙ্ক্ষিত ক্যারিয়ারের পাশাপাশি উন্নত জীবনধারণের প্রস্তাবনা নিয়ে এই গন্তব্যগুলোর সঙ্গে একই সারিতে রয়েছে ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ড। বৈচিত্র্যপূর্ণ কোর্সে বিশ্ব মানের পাঠদানের অভিজ্ঞতা নিতে দেশটি প্রতি বছর স্বাগত জানায় হাজার হাজার বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের। চলুন, আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া, পড়াশোনা ও জীবনধারণের আর্থিক ব্যবস্থাপনার নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
আয়ারল্যান্ড কেন উচ্চশিক্ষার অন্যতম গন্তব্য
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সদস্য রাষ্ট্রটির ক্রাইম ইনডেক্স ৪৬ দশমিক ৮। অন্যদিকে ১ দশমিক ৩০৩ গ্লোবাল পিস ইনডেক্স নিয়ে শীর্ষ শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় দেশটি দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
এই সূচকগুলোর পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড কিউএস র্যাংকিং-এও আছে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তার মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন, যার র্যাংক ৮১। ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন রয়েছে ১৭১-এ, গালওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ২৮৯-এ ও ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক-এর অবস্থান ২৯২-এ। স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি রয়েছে যথাক্রমে ৪২৬ ও ৪৩৬-এ।
আইরিশ শিক্ষার প্রসিদ্ধির কারণে এটি অভাবনীয় সাড়া ফেলেছে বৈশ্বিক কর্মক্ষেত্রে। অনেক বহুজাতিক কোম্পানি আয়ারল্যান্ডে তাদের ইউরোপীয় সদর দপ্তর স্থাপনের মাধ্যমে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তার পরিবেশ গড়ে তুলেছে। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা ইন্টার্নশিপ, কো-অপারেশন প্রোগ্রাম এবং নেটওয়ার্কিং ইভেন্টগুলোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ইন্ডাস্ট্রিগুলোর সান্নিধ্যে যেতে পারে।
সবচেয়ে সুবিধাজনক বিষয়টি হচ্ছে দেশটির ইংরেজি ভাষাভাষী যোগাযোগ ব্যবস্থা। শুধুমাত্র এই একটি ভাষা দক্ষতা নিয়ে আয়ারল্যান্ড পড়াশোনা, স্কলারশিপ ও চাকরির সুবিধাগুলো পাওয়া যায়। এই সুবিধার প্রভাব শ্রেণীকক্ষের বাইরেও বিস্তৃত। যেমন আবাসনের ক্ষেত্রে আইরিশ পরিবারগুলোর সঙ্গে শেয়ার করে থাকলে ভাড়া অনেকটাই বাঁচানো যায়।
তাছাড়া আন্তর্জাতিক ভাষা হওয়াতে ইংরেজিকে পুঁজি করে এই আয়ারল্যান্ড থেকেই বৈশ্বিক নেটওয়ার্কগুলোতে প্রবেশাধিকার লাভ করা যায়। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ভ্রমণের সুযোগও সৃষ্টি হয়, যা ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করার এক অভাবনীয় প্রয়াস।
আরও পড়ুন: চেক প্রজাতন্ত্রে উচ্চশিক্ষা: পড়াশোনার খরচ ও স্কলারশিপসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
আয়ারল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য যে যোগ্যতাগুলো থাকা দরকার
আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামগুলোর জন্য ক্লাস ১২ তথা উচ্চ মাধ্যমিক সনদ পরীক্ষায় সাধারণত কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ থাকা প্রয়োজন। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে সাধারণ শর্ত হচ্ছে একই বিষয়ে ন্যূনতম ৬০ শতাংশ বা তার বেশি স্কোরের স্নাতক ডিগ্রি। মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্যও একই বা প্রাসঙ্গিক বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন। পিএইচডির জন্য প্রকাশনা এবং এমবিএর ক্ষেত্রে পেশাগত অভিজ্ঞতা দেখাতে হবে।
ইংরেজি ভাষা দক্ষতার জন্য আইইএলটিএস, টিওইএফএল বা পিটিই-এর মতো ভাষা যাচাই পরীক্ষার স্কোরগুলো দেখা হয়।
আয়ারল্যান্ডের সেরা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাহিদাসম্পন্ন কোর্স
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য আয়ারল্যান্ডের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-
· আমেরিকান কলেজ ডাবলিন
· ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন
· ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন
· ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি
· লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়
· ইউনিভার্সিটি কলেজ কর্ক
· মায়নুথ বিশ্ববিদ্যালয়
· কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্ট
· আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গালওয়ে
· গালওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়