দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্মার্ট আর ব্যস্ত নগরী ঢাকা। হওয়াটাই স্বাভাবিক। মোঘল, ব্রিটিশ সব আমলেই ‘ঢাকা’ নগর হিসেবে শাসকদের কাছ থেকে গুরুত্ব আদায় করেছে।
মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর ঢাকাকে সুবা বাংলার রাজধানী করেন। মোঘল পরবর্তী যুগে প্রায় ১৯০ বছর ঢাকা গুরুত্ব নিয়েই ব্রিটিশ শাসনাধীন থাকে। এরপর ১৯৪৭ সালে ঢাকা পূর্ববঙ্গের রাজধানীতে উন্নীত হয়। ১৯৫৬ সালে ঢাকা পূর্ব পকিস্তানের রাজধানীর মর্যাদায় আসীন হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের রাজধানী।
এতক্ষণ ঢাক ঢোল বাজিয়ে ঢাকার গুরুত্বের গুণকীর্তন করা হলো। অথচ সেই ঢাকাকেই আবার অসহায় নগরী বলা কেমন বিসদৃশ। তাই নয় কি? তাহলে এ কোন অসহায়ত্ব! আসুন, তাহলে আজকের আধুনিক ঢাকার দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক।
গ্রীষ্মকালের ঢাকা এখন পর্যাপ্ত গাছগাছালির অভাবে রুক্ষ। বর্ষাকালের ঢাকা এখন ঘণ্টাখানেক সময়ের বৃষ্টিতে নিষ্কাশনের অব্যবস্থায় পানির নিচে হাবুডুবু খায়। অপ্রতুল, অপরিকল্পিত, দুর্বল ট্রাফিক ব্যাবস্থার কারণে ব্যস্ত সময়গুলোতে যানজটে অসহায় ঢাকা অচল শহরে পরিণত হয়। নাগরিক ভোগান্তির শেষ থাকে না। এতসব সমস্যার আবর্তে বেষ্টিত একটা শহরের অসহায়ত্ব কি আর বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে?
করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুও এখন মূর্তিমতি আতংক হয়ে জনজীবনে আবির্ভূত। দু’পক্ষ যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। করোনার বহু আগে থেকেই ডেঙ্গু নিয়ম করে প্রতিবছর একই সময়ে দেশজুড়ে হামলে পড়ে। এরই মাঝে ঢাকা যেন ডেঙ্গুর অন্যতম পছন্দের শহরে পরিণত হয়েছে। দেশের ডেঙ্গু আক্রান্ত দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকায়!
ঢাকা আমাদের দেশের রাজধানী, যার আভিধানিক অর্থ রাজার বাড়ি। রাজধানী মানেই দেশের হেড অফিস। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের হেড অফিস থাকে জাকজমকপূর্ণ ঝকঝকে চকচকে নয়নাভিরাম। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে রাজধানী ঢাকা বাংলাদেশের হেড অফিস। অথচ আমাদের সেই রাজধানী বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নোংরা শহরের অন্যতম। বসবাসের অযোগ্যতার বিচারে বিশ্বের চতুর্থতম স্থানের অধিকারী!