ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ফরিদপুরে শনিবার ষষ্ঠ বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে আরেকটি বিশাল শোডাউন করতে যাচ্ছে বিএনপি।
এখন পর্যন্ত তাদের প্রথম পাঁচটি জমকালো জনসভা সাফল্যের সঙ্গে করার পর প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সংখ্যায় ও সাংগঠনিক ক্ষমতার দিক থেকে তার সামর্থ্য প্রমাণ করেছে। এমনকি সেই সাফল্য রোধে সৃষ্ট বাধাগুলোকে মোকাবিলা করতে তারা প্রস্তুত হয়ে উঠেছে। একইভাবে আবারও তারা আরেকটি বাস ধর্মঘটকে উপেক্ষা করবে। ৩৮ ঘন্টার যেই ধর্মঘট শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশ: ৫ জেলার সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
পরিবহন ধর্মঘটগুলো আগের অন্তত চারটি সমাবেশে কোনও প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হওয়ায় নতুন এই পরিবহন ধর্মঘট বিএনপি ও তার সমর্থকদের আর বাধা দিতে পারবে বলে মনে হয় না।
বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা কমরপুর আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে একটি মঞ্চ তৈরি করেছেন। যেখানে শনিবার দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে বিএনপির সমাবেশের একদিন আগে ফরিদপুর শহরের রাসেল মোড়ে বড় শোডাউন করেছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি ও জামায়াতের নৈরাজ্য ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে জেলা আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাসেল মোড়ে কয়েক হাজার ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী জড়ো হন।
শহরে যখন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করছিল, তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা যারা দুই দিন আগে থেকে এসে প্রচারণা শুরু করেছিল, তারা তাদের সমাবেশস্থলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে।
সমাবেশে যোগ দিতে বিভাগীয় পাঁচটি জেলা- ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ইতোমধ্যেই নগরে পৌঁছেছেন।
শুক্রবার সকাল থেকে ফরিদপুরের সঙ্গে সারাদেশে বাস যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার থেকেই আশেপাশের জেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের ট্রেন, ট্রাক, অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার, মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহন ও মাইক্রোবাসে করে সমাবেশস্থলে আসতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: আইএমএফের লোন নিলে আরও ভারী হবে ঋণের বোঝা: বিএনপি
ইউএনবি’র সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, তাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন বাধা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাস ধর্মঘট ও গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞার কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সমাবেশে যোগ দিতে ফরিদপুরে আসছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার শুরু করেছে।
শামা বলেন, ‘জনগণের ধারণা ঐতিহাসিক কারণে ফরিদপুর আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি। তবে পরিস্থিতি পাল্টেছে এবং শনিবার আমাদের বিশাল সমাবেশের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হবে।’
তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ বিরক্ত: ‘সেজন্যই মানুষ সব কষ্ট-যন্ত্রণা সহ্য করে আমাদের সমাবেশে আসছে।’
শামা জানান, তারা তাদের সমাবেশে এক লাখের বেশি লোকের অংশগ্রহণ আশা করছেন।
সমাবেশকে ব্যর্থ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগের মধ্যে ফরিদপুর জেলা বাস শ্রমিক ও মালিকরা শুক্রবার সকালে ৩৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে যান, যার ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট শেষ হবে শনিবার রাত ৮টায়।