ছয়টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের তিনজন, ১৪ দলীয় জোটের দুজন ও স্বতন্ত্র একজন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
বুধবার আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারবিরোধী আন্দোলনের কৌশলগত সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে গত ডিসেম্বরে বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের পর শূন্য হওয়া ছয়টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জিয়াউর রহমান ৯৪ হাজার ৯২৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার আপেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৫ হাজার ৩৯৯ ভোট।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামিউল হককে তিন হাজার ৬৫৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আবদুল ওয়াদুদ। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৬৩৮ ভোট এবং সামিউল পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৯৮০ ভোট।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা এ কে এম গালিব খান রাত ৯টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করেন।
বগুড়া-৪ আসনে ১৪ দলের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন মশাল প্রতীক নিয়ে ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। আলম মাত্র ৮৩৪ ভোটে পরাজিত হন।
আরও পড়ুন: ৬টি আসনের উপনির্বাচনে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসির অনুমান
বগুড়া-৬ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রাগেবুল আহসান পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নান পেয়েছেন ২১ হাজার ৮৬৪ ভোট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া, যিনি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতাও, তিনি ৪৪ হাজার ৯১৬ ভোটে জয়ী হয়েছেন।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদ ভাসানী পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৩৫ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির আরেক বহিষ্কৃত নেতা আবু আসিফ আহমেদ পেয়েছেন তিন হাজার ২৬৯ ভোট।
ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন ৮৪ হাজার ৪৭ ভোট পেয়ে তার নিকটতম প্রার্থী স্বতন্ত্র অধ্যক্ষ গোপাল চন্দ্র রায়কে ৩৩ হাজার ৭৩৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
গোপাল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩০৯ ভোট এবং ১৪ দলের সমর্থিত প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াসিন আলী পেয়েছেন ১১ হাজার ৩৫৬ ভোট। সেখানে উপ-নির্বাচনে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ চলছে, তবে ভোটারদের উপস্থিতি কম
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ছয়টি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে গড় ভোটার উপস্থিতি ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হতে পারে। এটি আমাদের প্রাথমিক অনুমান, চূড়ান্ত নয়। ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখা হয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে উপনির্বাচন পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
উপ-নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান। তবে ভোটকেন্দ্রে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়নি।
ছয়টি আসনে চল্লিশ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
এর আগে ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর এক জনসভায় বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। গত ১১ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য আমিনুল ইসলাম, বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন, বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ও ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান পদত্যাগ করেন। বিএনপির অপর দুই সংসদ সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুন অর রশীদ পরবর্তীতে পদত্যাগ করেছেন।