সোমবার কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সেলিনা খাতুন এ আদেশ দেন।
ওই তিন আসামি হলেন- আনিসুর রহমান আনিস (৩৫), সবুজ হোসেন (২০) ও হৃদয় আহমেদ (২০)। গত শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের সমূলে উৎপাটন করা হবে: কৃষিমন্ত্রী
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় পুলিশ শুক্রবার সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান আনিসকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্যমতে ঘটনায় জড়িত অপর দুই জন হৃদয় আহমেদ ও সবুজ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর: যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৩
তাদেরকে গ্রেপ্তারের পর কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর আরাফাত শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, এ ঘটনার সাথে গ্রেপ্তার তিনজন ছাড়াও বাচ্চু (৩২) নামের আরও একজন পলাতক রয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।
ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে ভাস্কর্য ভাঙচুর
ভাস্কর্য ভাঙচুরের বিষয়ে পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, ‘কলেজ পরিচালনা পর্ষদ ও কলেজের অধ্যক্ষের সাথে গ্রেপ্তারকৃত যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমান আনিসের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জের ধরে ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।’
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরকারীদের চরম মূল্য দিতে হবে: আ’ লীগ
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে আসা কয়েকজন দুর্বৃত্ত কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া মহাবিদ্যালয়ে অবস্থিত বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর করে।
পুলিশ জানায়, কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া কলেজে স্থাপিত বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটির ডান গাল ও নাক ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া গত ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ মাদরাসার দুই শিক্ষক ও দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর পর কুষ্টিয়ায় এবার বিপ্লবী বাঘাযতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুর
প্রসঙ্গত, রাজধানীতে জাতির পিতার একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা নিয়ে সম্প্রতি বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়। গত ১৩ নভেম্বর দেশে ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করেন খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিম। তাদের এই মন্তব্যে দেশব্যাপী সৃষ্টি হয় নানা আলোচনা-সমালোচনা।
চলমান এ পরিস্থিতির মধ্যেই কুষ্টিয়া শহরে ভাঙা হয় বঙ্গবন্ধুর একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্য। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই কুষ্টিয়ায় আবারও ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর মামলায় ৪ জন রিমান্ডে