বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, ‘অসৎ উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’
বুধবার সাংবাদিকরা খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কে বিভিন্ন গুজবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করায় তিনি এ কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘এগুলো একেবারেই গুজব এবং ভিত্তিহীন। আপনি যদি সরাসরি আমাকে ফোন করেন তাহলে আমি আপনাকে ম্যাডামের (খালেদা) অবস্থা সম্পর্কে জানাব।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে দলের প্রধানের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করার পরও কিছু গুজব রয়েছে। আমি মনে করি, একটি মহল কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে এগুলো ছড়াচ্ছে।’
মঙ্গলবার রাত থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে খালেদার অবস্থা গুরুতরভাবে অবনতি হয়েছে, যা অনেক বিএনপি নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।
ফখরুল অবশ্য বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখনও ক্রিটিক্যাল অবস্থায় রয়েছেন। চিকিৎসকরা তার অবস্থা যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সেই অনুযায়ী তার চিকিৎসা করছেন। তারা তাদের সেরাটা করছেন।’
খালেদার অবস্থার খারাপ খবরে দেশব্যাপী 'রেড অ্যালার্ট' জারি নিয়ে আরেকটি গুজব সম্পর্কে জানতে চাইলে, বিএনপি নেতা বলেন, ‘তিনি এর কোন ভিত্তি খুঁজে পাননি। কারণ সরকার এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি।’
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, ‘মিথ্যা’ মামলায় তাকে (খালেদা) কারাগারে পাঠানোর পর কোনো চিকিৎসা না দিয়ে সরকার তাদের দলীয় প্রধানকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
দেশ ও জনগণের প্রতি খালেদার অনেক অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘সরকার এমন একজন নেতাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে। বিদেশে তার (খালেদা) চিকিৎসার খুব প্রয়োজন…আমাদের নেত্রীকে বিদেশে যেতে দিতে সরকারের কোনো আইনি বাধা নেই।’
ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে যে কোনো সময় তাকে বিদেশে পাঠানোর ক্ষমতা সরকারের রয়েছে। দেশের মানুষ এখন বিশ্বাস করে, সরকার চায় না খালেদা জিয়া বেঁচে থাকুক। এ কারণে তারা দেশের বাইরে তার চিকিৎসার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: ৮ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
উল্লেখ্য হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার ছয় দিন পর ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি করা হয়।
বিএনপির চেয়ারপার্সনের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের জটিলতায় ভুগছেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ১১ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন জমা দেন।
তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া কারাগারে ফিরে নতুন করে আবেদন করলে সরকার তার আপিল বিবেচনা করবে।
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে সরকারের অনুমতি চেয়ে মঙ্গলবার বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের একটি প্রতিনিধি দল আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছে। খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দেয়ায় সরকারের কোনো আইনি বাধা নেই বলে তারা যুক্তি দেখিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন,তারা স্মারকলিপিটি বিবেচনা করে দেখবেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর দাবি স্বাস্থ্যগত নয়, রাজনৈতিক: তথ্যমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: বুধবার ডিসি অফিসে স্মারকলিপি দেবে বিএনপি