রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘গণফোরামের অভ্যন্তরে ভুল বোঝাবুঝির কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে সব সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে গণফোরামের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।’
আরও পড়ুন: মন্টুসহ ৪ জনকে ‘শোকজ’ দিল ড. কামালের গণফোরাম
ইতোমধ্যে দলের অভ্যন্তরে যে সব বহিষ্কার ও পাল্টা বহিষ্কার হয়েছে, তা অকার্যকর বলে গণ্য হবে, জানান ড. কামাল হোসেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে গিয়ে ১৯৯৩ সালে গণফোরাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
গত বছরের ২৬ এপ্রিল দলের পঞ্চম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে দলীয় নেতাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। ওই কাউন্সিলে দলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ অনেক দলীয় শীর্ষ নেতাদের বাদ দিয়ে ওই কমিটির গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন: ড. কামালের গণফোরামের কাউন্সিল ১২ ডিসেম্বর
গত ২৬ সেপ্টেম্বর গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়াকে বহিষ্কার করার পাশাপাশি আগামী ২৬ ডিসেম্বর দলের জাতীয় কাউন্সিলের ঘোষণা দিয়েছে গণফোরামের একাংশ।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির একাংশের বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়াকে এ সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
বর্ধিত সভা শেষে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ বলেন, ‘সংগঠনকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও গণমুখী করার লক্ষ্যে আগামী ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আরও পড়ুন: রেজা কিবরিয়াকে বহিষ্কারের ঘোষণা গণফোরামের একাংশের
তিনি বলেন, জাতীয় কাউন্সিলকে সফল করার লক্ষ্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে আহ্বায়ক করে ২০১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আবু সাইয়িদ বলেন, ‘সংগঠনের শৃঙ্খলা ও গণতন্ত্র অমান্য করে দলের ঐক্য ও স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য আ ও ম শফিকউল্লাহ, অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোশতাক আহমেদকে তাদের পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
আবু সাইয়িদের দাবি, বর্ধিত সভায় ৫২ জেলার ২৮৩ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
ড. কামাল তাদের সাথে থাকবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, দলের কাউন্সিলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ‘নির্বাচিত সরকার ছাড়া’ বন্যা মোকাবিলা সম্ভব নয়: গণফোরাম
ড. রেজা কিবরিয়া অবশ্য বলেছিলেন, দলের নিয়ম অনুযায়ী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ সভার আহ্বান না করায় গণফোরামের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
এদিকে, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মোস্তফা মহসিন মন্টু, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও সুব্রত চৌধুরীসহ আটজনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণফোরামের ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন অংশ।
গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকে মোস্তফা মহসিন মন্টু, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী ও জগলুল হায়দার আফ্রিক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পাঠানো শোকজ নোটিশের জবাব না দেয়ায় তাদের দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিল করলেন ড. কামাল
এর আগে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া হেলালুদ্দীন, লতিফুল বারী হামিম, খান সিদ্দিকুর রহমান ও আবদুল হাসিব চৌধুরীকেও দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।
সভায় বর্তমান রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বাস্তবতার আলোকে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী, গতিশীল ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে ১২ ডিসেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।