দুদকের দায়ের করা মামলায় বেলা পৌনে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন তিনি। বিচারক জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গুলজার বেগম চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের ৪নং সাংগঠনিক সম্পাদক। তার স্বামী নওয়াব বর্তমানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকায় এসআই পদে আছেন। নগরীর লালখান বাজার এলাকায় তাদের বিলাস বহুল বাড়ি রয়েছে।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে ৬ মহানগরে সমাবেশ করবে বিএনপি
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, ঢাকায় সিআইডিতে কর্মরত এসআই নওয়াব আলীর স্ত্রী গুলজার বেগম দুর্নীতি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। দুদকের পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। আদালত জামিন আবেদন গ্রহণ না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
তিনি জানান, ১৯৯২ সালে কনস্টেবল পদে যোগ দেন নওয়াব আলী। মাছ চাষ থেকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা আয় করেছেন বলে কাগজপত্রে দেখান। এবং এই অর্থের মালিক দেখানো হয় তার স্ত্রীকে। কিন্তু বাস্তবে তার মাছ চাষের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আইনজীবী মাহমুদুল হক বলেন, দুদকের দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে গুলজার বেগম ও তার স্বামী এসআই নওয়াব আলীসহ চার আসামির বিরুদ্ধে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। কিন্তু আসামিরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। আসামি গুলজার বেগম মঙ্গলবার আত্মসমর্পণ করেন। এই মামলায় আগামী ৬ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।
খালেদার কারাবন্দী জীবনের তিন বছর: প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
দুদক সূত্র জানায়, ১৯৯২ সালে কনস্টেবল পদে যোগ দেন নওয়াব আলী। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকার মালিক সাজিয়েছেন স্ত্রী গুলজার বেগমকে। মাছ চাষ থেকে এক কোটি ১০ লাখ আয় টাকা করেছেন বলে কাগজপত্রে দেখালেও বাস্তবে মাছ চাষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তারপরও মাছ চাষ করা হয় মর্মে কর কর্মকর্তারা প্রতিবেদন দিয়েছেন।
এসআই নওয়াব আলী, তার স্ত্রী গুলজার বেগম, কর অঞ্চল-১ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) বাহার উদ্দিন চৌধুরী ও কর পরিদর্শক দীপংকর ঘোষকে আসামি করে আদালতে দুদক অভিযোগপত্র দিয়েছে।
দুদক তদন্তে পেয়েছে যে, নওয়াব আলীর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের কেকানিয়া এলাকায়। সেখানে ২০১৩ সালে নিজের নামে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ জমির ওপর একটি দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। স্ত্রী গুলজারের নামে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ছলিমপুরে ৩৫৪ শতক জমি, চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার এলাকায় পার্কিংসহ এক হাজার ১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, একই এলাকায় ৪ শতক জমি রয়েছে। গুলজারের নামে একটি মাইক্রোবাসও রয়েছে। এছাড়া গুলজার বেগমের নামে নগরীর ২৫নং রামপুর ওয়ার্ডের বড়পুকুর পাড় এলাকায় ২০ কোটি টাকা দামের একটি বহুতল ফ্ল্যাট রয়েছে।