বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আজ যখন তিনি (খালেদা জিয়া) জীবনের সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছেন, তখন তাকে আটকে রাখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া শুধু বন্দ নন, দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক নম্বর নেত্রীও।
তিনি বরেন, তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং দুইবারের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দেশের সেবা করেছেন।
আরও পড়ুন: অধিকারের আদিলুর ও নাসিরউদ্দিনের মুক্তি দাবি ফখরুলের
শুক্রবার বিকালে ঢাকার উত্তরায় সরকারের পদত্যাগ, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও এক দফা দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ঢাকা উত্তর শাখা বিএনপি হাজার হাজার নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণে আব্দুল্লাহপুর পলওয়াল সুপার মার্কেটসংলগ্ন মাঠে এ সমাবেশের আয়োজন করে।
ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকার খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, চেয়ারপারসনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। শিগগিরই তার অবস্থার অবনতি হতে পারে।
তার পরিবার, ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির দাবি সত্ত্বেও সরকার খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানবিক কারণে চিকিৎসার স্বার্থে তাকে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানো উচিত।
ফখরুল বলেন, কারাবন্দিদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর উদাহরণ রয়েছে। এ ছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শেখ হাসিনাকে চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় পাঠানো হয়েছিল।
সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় ও উত্তর শাখার নেতারা বক্তব্য দেন।
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসনকে তার মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে এভারকেয়ার হাসপাতালের কেবিন থেকে সিসিইউ-তে স্থানান্তর করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকে বিএনপি চেয়ার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পর খালেদাকে পুরান ঢাকা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন খালেদা।
করোনাভাইরাসপ্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশ ত্যাগ না করার শর্তে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়।
আরও পড়ুন: সরকার পদত্যাগ না করলে দেশে সংঘাতের আশঙ্কা করছেন ফখরুল