বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ৭৪ বছর বয়স পূর্ণ হলো বুধবার (২৬ জানুয়ারি)। প্রতিবারের মতো এবারও এই বিএনপি নেতা জন্মদিনে তার পরিবারের সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা ও ভালবাসায় সিক্ত হয়েছেন।
জন্মদিনের সকালে তার ঘুম ভেঙেছে বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ আর বোন আনারকলি ফরহাদ বানু নাগিনা আমিনের ফোন পেয়ে। উভয়ই তাকে ‘শুভ জন্মদিন’ বলে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, জন্মদিন উদযাপনের কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি ছিল না; তবে তার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং দেশ-বিদেশের দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি সাধারণত আমার জন্মদিন উদযাপন করি না। সকালে ঘুম থেকে উঠে অস্ট্রেলিয়া থেকে আমার বড় মেয়ের ফোন আসে, সে আমাকে শুভেচ্ছা জানায়। তারপর আমার বোন, ছোট মেয়েও আমাকে ফোন করে ‘শুভ জন্মদিন’ বলে শুভেচ্ছা জানায়।
ফখরুল জানান, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও, তিনি এখনও খুবই দুর্বল।
আরও পড়ুন: বিএনপি দেশকে বাঁচাতে চাইছে, কোনো ক্ষতি করছে না: ফখরুল
তিনি জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, দলের সিনিয়র নেতা, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীরাও তাকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
ফখরুলের ভাষায়, ‘আমার জন্মদিন এভাবেই কেটে যাচ্ছে।’
জন্মদিন উপলক্ষে তার অনুভূতি জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, জন্মদিন মানে আমার জীবন থেকে আরেকটি বছর হারিয়ে গেছে এবং পৃথিবীতে আমার সময় শেষ হয়ে আসছে। আমার বয়স এখন ৭৪ বছর, আপনি বলতে পারেন এটি আমার একটি দীর্ঘ যাত্রা এবং আমি অনেক কিছু দেখেছি...আমি বেঁচে থাকার মানে খুঁজে পেয়েছি। জীবন আমার কাছে সুন্দর!
বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে খারাপ সময় পার করছে বলে আক্ষেপ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এবং খারাপ দিন শেষ হবে। বাংলাদেশের মানুষ কখনও হেরে যায় না।
আরও পড়ুন: সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত মির্জা ফখরুল
১৯৪৮ সালের ২৬ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন মির্জা ফখরুল। তার বাবা প্রয়াত মির্জা রুহুল আমিন ছিলেন একজন মুসলিম লীগ নেতা এবং পাকিস্তান সরকারের একজন মন্ত্রী।
ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ফখরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
পরে তিনি বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। আশির দশকে শিক্ষকতা ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে যোগ দেন ফখরুল।
২০০১ সালে বিএনপির টিকিটে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রতিমন্ত্রী হন তিনি। এরপর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও বগুড়া-৬ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করায় তিনি শপথ নেননি।
২০১১ সালে দলের তৎকালীন মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুর পর ফখরুলকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয়। পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালে তাকে দলের মহাসচিব পদের পূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ইসি গঠন নিয়ে সংলাপ ‘অর্থহীন’: ফখরুল