দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নামে বর্তমান 'পক্ষপাতদুষ্ট' নির্বাচন কমিশনের (ইসি) 'নাটক' বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিরোধী দলের দাবি মেনে নিয়ে সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, জনগণের দাবি উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচন করতে সরকার পাগল হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা তার অধীনস্থ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে অবৈধভাবে তফসিল ঘোষণার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন: মুণ্ডুহীন বিএনপি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, 'নির্বাচনের তফসিলের নামে এই নাটক বন্ধ করতে আমরা কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করতে চাই। আগে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।’
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচন কমিশন বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
বিরোধী দলের এক দফা দাবি না মানলে পরিণতি ভয়াবহ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
রিজভী বলেন, 'বর্তমান ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। জনগণ বাংলাদেশের মাটিতে কোনো প্রহসনমূলক ও নাটকীয় নির্বাচন হতে দেবে না।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন এবং ইসি দু-একদিনের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করতে পারে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে বুধবার বিকালে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বৈঠক করতে পারে।
ইসি জাহাংগীর আলম মঙ্গলবার বলেন, তফসিল কবে ও কীভাবে ঘোষণা করা হবে তা জানাতে তিনি বুধবার সকালে প্রেস ব্রিফিং করবেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করে। কারণ, দলটি কখনোই সামাজিক সম্প্রীতি বা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। ‘তাই তারা তাদের প্রতিপক্ষকে আক্রমণাত্মক ও অশালীন ভাষায় আক্রমণ করে এবং বিভিন্নভাবে দমন করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ কখনই মনে করে না যে, এই জবরদস্তিমূলক দুঃশাসন যে কোনো মুহূর্তে উৎখাত হতে পারে।’
আগামীকাল বুধবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে রাজপথে নামার আহ্বান জানান তিনি।
‘এই অবরোধ গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য। দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একটি অংশও এই অবরোধ। আসুন আমরা সবাই এই অবরোধ সফল করি।’
তিনি দাবি করেন, বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর জন্য অগ্নিসংযোগে লিপ্ত রয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ৪২০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন রিজভী।
আরও পড়ুন: বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে কাঁটাতারের ব্যারিকেড অপসারণ
তারেক ও বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তার অসহায়ত্বের বহিঃপ্রকাশ: রিজভী