নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশে এমন কোনো নির্বাচন হবে না যেখানে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবে না। নির্বাচন অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে এবং এটি একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন দ্বারা পরিচালিত হতে হবে।’
শনিবার জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে সরকারকে খালেদা জিয়া এবং অন্যান্য সকল রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্ত করতে হবে এবং ৩৫ লাখ বিরোধী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায়, দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।’
আরও পড়ুন: ক্ষমতায় টিকে থাকতে আ’লীগ আমলাতন্ত্রকে ব্যবহার করছে: ফখরুল
ফখরুল সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের অনুকূল পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আপনি (সরকার) নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি আইন গঠনের কথা বলছেন ... আপনি যদি সংসদে আপনার নিজের সুবিধার জন্য একতরফা আইন পাস করেন এবং এর অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন করেন, তাহলে মানুষ তা গ্রহণ করবে না।’
বিএনপি নেতার অভিযোগ, ‘সরকার সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে রাজনীতিকরণ করেছে। আপনি (সরকার) বিচার বিভাগ, প্রশাসন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে রাজনীতিকরণ করছেন। এমনকি, আপনি সেনাবাহিনীকেও রাজনীতিকরণের চেষ্টা করছেন। আমরা এখন স্বাধীনভাবে বলতে ও লিখতে পারি না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাংবাদিকরাও এখন ভয় ছাড়া কিছু লিখতে পারছেন না। কারণ তাদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে মামলা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ যারা দীর্ঘ যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছে তারা কখনই স্বৈরাচারী ও একদলীয় শাসন মেনে নেবে না।’
আরও পড়ুন: আমলারা দেশ চালাচ্ছেন: মির্জা ফখরুল
ফখরুল গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করার জন্য জোরালো আন্দোলন করার জন্য মহিলা দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করার জন্য এক দফা আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। আমরা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য একটি শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য গঠনের চেষ্টা করছি। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে একজন দেবদূতের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও আমরা কোনো সুবিধা পাব না।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার মুক্তি বিএনপির প্রধান চ্যালেঞ্জ