আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ অগ্রাধিকার পাবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের কারণে হয়ত শতভাগ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমাদের সফলতা রয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে টিসিবিসহ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করছে। যার জন্য সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: সংলাপ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হয়, আগুনসন্ত্রাসীদের সঙ্গে নয়: তথ্যমন্ত্রী
শনিবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসিতে) জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র যৌথ উদ্যোগে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক ছায়া সংসদের গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।
করোনা পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, যার প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। এতে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটি সত্যি।
এছাড়া দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি ও বেসরকারি খাতের যৌথ ভূমিকা মুখ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজের চাহিদা তার চেয়ে প্রায় ৭-৮ লাখ টন ঘাটতি থাকে। যেটা আমরা ভারত থেকে আমদানি করে থাকি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির পারমিশন দেওয়ার জন্য বলা হলেও কৃষকের কথা ভেবে অনুমতি দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, পরে যখন আমদানির অনুমতি দেওয়া হলো— তখন ভারত আমদানির ওপর ৪০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করল। এর কিছুদিন পরেই ভারত আবার প্রতি টন পেঁয়াজ রপ্তানি ৮০০ ডলার করে, যে কারণে সরকারের পক্ষে নির্ধারিত দাম ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।
চিনির আমদানি শুল্ক কমানোর পরও দাম না কমা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ডলারের মূল্য আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। যেসব পণ্য আমদানি করতে হয়, সেগুলো আন্তর্জাতিক বাজার বা ডলারের মূল্যের ওপর নির্ভর করে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা চাইলেও সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারি না। আমরা যেটা পারি, সেটি হলো শুল্ক কমাতে।
যেমন— চিনির দাম কমাতে আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় চিনির দামে কোনো প্রভাব পড়েনি বরং বেড়েছে। ফলে এর সুফল ভোক্তা পায়নি।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন— জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
আরও পড়ুন: রপ্তানি বাড়াতে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দূর করতে হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী