বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অর্থ পায়রা সমুদ্রবন্দরে কীভাবে ব্যয় হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন।
এক আলোচনা সভায় তিনি আরও অভিযোগ করেন, সরকার লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) জোর দিয়ে বলেছেন যে রিজার্ভ থেকে অর্থ পায়রা সমুদ্রবন্দরে ব্যয় করা হয়েছিল। আমরা জানতে চাই কিভাবে টাকা খরচ হয়েছে, কার দ্বারা খরচ হয়েছে এবং রিজার্ভের টাকা কোথায় গেছে।’
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আগামী নির্বাচন তদারকিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি পায়রা বন্দরে ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: রাজধানীর জলাবদ্ধতা সরকারের অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্পের ফল: ফখরুল
অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল। রিজার্ভের টাকা গেছে পায়রা বন্দরে। রিজার্ভের টাকা গেছে দেশের জনগণের জন্য খাদ্য ও সার কিনতে। রিজার্ভের টাকা জনগণের কল্যাণে ও আমদানিতে ব্যয় হয়েছে। কেউ এই অর্থ আত্মসাৎ বা অপব্যবহার করেনি।’
রিজার্ভের টাকা পায়রা সমুদ্রবন্দরে যায় এমন মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, মজুদের টাকা বন্দর নির্মাণের জন্য নয়।
তিনি বলেন, রিজার্ভের অর্থ আমদানিকৃত পণ্যের বিল পরিশোধ এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করার কথা।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকার ৪২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ নিয়ে বড়াই করত। তাহলে রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়?’
তিনি প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতা করে (রিজার্ভ থেকে টাকা কেউ চিবিয়ে খায়নি) বলেন, ‘আপনারা রিজার্ভ চিবিয়ে খাননি, কিন্তু গিলেছেন। আপনারা বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতি গিলে ফেলেছেন।’
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের একমাত্র কাজ জনগণের টাকা লুটপাট করা। ‘তারা প্রতিটি সেক্টরে সবকিছু খেয়ে ফেলছে। তারা (সরকার) বাংলাদেশকে ধ্বংস করেছে। আওয়ামী লীগের হাত থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে না পারলে অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন: দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে আ.লীগ: ফখরুল
বিশেষজ্ঞদের মতামত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পায়রা সমুদ্রবন্দর বন্দরে জাহাজ আসার প্রয়োজনীয় নাব্যতা না থাকায় অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে না। ‘তারা এখন আরও অর্থ লুট করার জন্য মূলধন ড্রেজিংয়ের একটি প্রকল্প নিয়েছে। তারা এভাবে দেশের সম্পদ নষ্ট করছে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে আন্দোলন করার জন্য তাদের দলের কোনো বিকল্প নেই।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করার আহ্বান জানান ফখরুল।
অন্যথায় গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশের জনগণ সরকারের পতন নিশ্চিত করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি নেতা।