তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবিলম্বে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সঠিক সমাধান।
শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেট ভবন মিলনায়তনে 'গণহত্যা ও বিচার: রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের অবস্থান' শীর্ষ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
ঢাবির সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এ সেমিনার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং এবং তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন ছাড়া আমরা আর কোনো উপায় দেখছি না।
রোহিঙ্গা সংকটের ষষ্ঠ বছর উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে হাছান মাহমুদ বলেন, কিছু শরণার্থীকে অন্য দেশে স্থানান্তরিত করা এটি সমাধান নয়, বরং এটি সমস্যা বাড়ানো।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন চালুকে অভিনন্দন জানাতে ব্যর্থ বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
সেমিনারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ এবং সঠিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারের চলমান প্রচেষ্টার ওপর আলোকপাত করা হয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ একটি অতিরিক্ত জনসংখ্যার দেশ। আমাদের প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্টসহ অনেক গুরুতর সমস্যা রয়েছে। যার সমাধান করার জন্য আমাদের শরণার্থী সমস্যা রয়েছে।
তিনি বলেন, যখন সামরিক জান্তা তাদের হত্যা করেছিল তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসতে এবং থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন। এটি মানবিক আহ্বানের দুর্দান্ত সাড়া ছিল।
তিনি আরও বলেন, যাইহোক এখন আমাদের ২ মিলিয়নেরও বেশি শরণার্থী রয়েছে। তারা যখন প্রথম এসেছিল তখন আমাদের শুরুতে ধর্মান্ধতার মতো কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। কিন্তু আমাদের প্রশাসন খুব সফলতার সঙ্গে সেই সমস্যাগুলো পরিচালনা করেছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে আসি তখন এনজিওর পক্ষ থেকে শুরুতে অনেক আপত্তি ছিল। কারণ ভাসান চর প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় তারা কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। তবে তারা কিছু দিন পরে আমাদের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না। তাদের এই সমস্যা সমাধানের জন্য আরও অনেক কিছু করার আছে। কিছু শরণার্থী স্থানান্তর একটি সমাধান নয়। প্রত্যাবাসনই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান।
মন্ত্রী বলেন, সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে ভারত ও চীন যদি হাত মেলায় তাহলে কোনো কিছুই তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে বাধা দেবে না।
ঢাবি ভিসি অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাসহ তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশংসার দাবি রাখে। বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলোও রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য পাঠাচ্ছে যা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে এটা চূড়ান্ত সমাধান নয়। আমরা এর সম্পূর্ণ সমাধান চাই। আমরা তাদের নিজেদের দেশে ফিরে দেখতে চাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) পরিচালক অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধি জোহানেস ভ্যান ডের ক্লাউ, মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডিসপ্লেসমেন্ট স্পেশালিস্ট আসিফ মুনির, প্রফেসর ড. জিয়া রহমান, ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ।